গত ৮মে অনুষ্ঠিত হয়েছে বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সকাল থেকে প্রায় সকল কেন্দ্রে সুষ্ঠভাবে ভোটগ্রহণ চললেও একটি কেন্দ্রে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, চাদপুরা ইউনিয়নের রায়পুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মনিরুজ্জামান। ভোটগ্রহণের শুরু থেকেই তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে৷ সকালে আনারস প্রতীকের সিল মেরে এক ভোটার প্রকাশ্যে তা এক এজেন্টকে দেখায়, বিষয়টি উপস্থিত এক গণমাধ্যমকর্মীর নজরে আসলে তিনি প্রিজাইডিং অফিসারকে অবহিত করলেও তিনি কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এছাড়া তার দায়িত্ব অবহেলার কারনে স্থানীয় বেশ কয়েজন বরিশালের বাহিরে অবস্থান করায় তাদের কয়েকটি ভোট অন্যায়ভাবে প্রদান করেছেন অন্য কয়েকজন ব্যক্তি। অর্থের বিনিময়ে তিনি কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থীর কর্মীদের নানা অন্যায় কাজের সুযোগ দিয়েছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সবশেষ হট্টগোল বাধে ভোট গণনার সময়ে। ভোট গননার শুরুতে তিনি বহিরাগত কয়েকজন লোক সেখানে উপস্থিত থাকতে দিলেও সেখানে তিনি কোন গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ করতে দেয় নি। পরে অনিয়মের বিষয়টি বুঝতে পেরে টেলিভিশন ও একটি জাতীয় দৈনিকের সাংবাদিক রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন কিন্তু রিটার্নিং যখন স্পষ্ট জানিয়েছেন ভোট গণনার সময়ে সাংবাদিক উপস্থিত থাকতে পারবেন তারপরেও সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়নি প্রিজাইডিং অফিসার মনিরুজ্জামান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কেন্দ্রে দায়িত্বশীল একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, প্রিজাইডিং অফিসারের অধিনে আমরা নির্বাচনীয়া ডিউটি পালন করেছি। অনেক অনিয়মকে তিনি নিয়মে পরিনত করেছেন! সাংবাদিকদের প্রবেশে তিনি নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন সেখানে আমাদের কিছু করার নেই কারন আমরা তার নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছি শুধু।
ওই কেন্দ্রে হানিফ নামে ঘোড়া প্রতীকের এক অনুসারী জানায়, সারা বরিশাল সুষ্ঠ নির্বাচন হয়েছে কিন্তু রায়পুরাতেই বাজে একটা নির্বাচন হয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসার ইচ্ছেমত কাজ করেছেন। ওনার মতো একজন জ্ঞানহীন একজন ব্যক্তিকে কেন যে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বুঝলাম না।
এবিষয়ে জানতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং অফিসার ও সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের সহকারী অধ্যাপক মনিরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমার সাথে এসব বলার সাহস কই পান। আপনাদের যা ইচ্ছা তাই করেন। যদি কিছু বলার থাকে রিটার্নিং কর্মকর্তার সাথে আলাপ করেন।
তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সি বলেন, সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপালন করতে পারবেন। ভোটের দিন সাংবাদিকরা আমাকে জানিয়েছেন, আমি দেখবো বিষয়টি।
অন্যদিকে সরকারের সুষ্ঠ নির্বাচনকে বেকায়দায় ফেলতে মনিরুজ্জামানের এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী সচেতন মহলের।