বরিশালের মুলাদীতে পুত্রবধূর সঙ্গে অভিমান করে শাশুড়ি পারভীন বেগম বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। পারভীন বেগমের ভাই সোহান কাজী বুধবার সকালে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার গাছুয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের মনির আকন ওরফে মরন আলীর স্ত্রী পারভীন বেগম (৪০) বিষপান করেছেন বলে দাবি স্বজনদের।
রাতে বিষপানের পর গৃহবধূকে হাসপাতালে না নেওয়ায় স্বামী ও স্বজনদের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
সোহান কাজী জানান, পারিবারিক বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার রাতে পারভীনের সঙ্গে তার পুত্রবধূর ঝগড়া হয়। স্বামী ও ছেলেরা বিষয়টি মীমাংসা না করেই ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১২টার দিকে পারভীন ঘরে থাকা বিষ পান করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু স্বামী ও ছেলেরা বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে পারভীনকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করেননি। সকালে সংবাদ পেয়ে তিনি তার বোনকে উদ্ধার করে মুলাদী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মুলাদী হাসপাতালের চিকিৎসক মো. শাহারাজ হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে বিষপান করা গৃহবধূকে বুধবার সকাল পৌনে ৭টায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। মৃত ঘোষণার পর পর স্বজনেরা দ্রুত মরদেহ নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগের চেষ্টা করেন। পুলিশ তাদের রেইন্ট্রিতলা এলাকা থেকে লাশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী জানান, রাতে পারভীন বেগম বিষপানের পরে মনির আকন ওরফে মরন আলীর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাননি কিংবা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি। উল্টো এলাকায় প্রচার করেছেন তার স্ত্রী স্ট্রোক করে মারা গেছেন। বুধবার সকালে পারভীনের ভাই হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিষপানের বিষয়টি জানাজানি হয়।
এ ব্যাপারে মনির আকন ওরফে মরন আলী স্ত্রীর চিকিৎসার অবহেলার বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, পারভীনের বিষপানের বিষয়টি বুঝতে না পারায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। বুধবার সকালে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার ভাইকে সংবাদ দিয়ে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
মুলাদী থানার ওসি মো. জাকারিয়া জানান, পুত্রবধূর সঙ্গে অভিমান করে পারভীন বেগম বিষপানে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। মরদেহ বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।