বার্তা ডেস্ক ॥ আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন ১১৭, ভোলা-৩ (তজুমদ্দিন-লালমোহন) আসনে চারজন প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা শুরু করেন। এর মধ্যে আ’লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাধারণ ভোটারদের কাছে পরিচিত পাশাপাশি জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থীদেরকে চিনে না এ আসনের ভোটারসহ সাধারণ মানুষ। এই যখন ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীর অবস্থান তখন আগামী ৭ জানুয়ারির ভোটে তারা কতটুকু সুবিধা আদায় করতে পারবে সেটিই এখন বিবেচ্য বিষয়। তবে সাধারণ ভোটাররা মনে করে নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বাংলাদেশ আ’লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন (নৌকা) ও আ’লীগের সাবেক সংসদ সদস্য দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) জসিম উদ্দিনের (ঈগল) মধ্যে।
এর বাহিরে অন্য দু’জন প্রার্থী ভোলা জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক মাও. কামাল উদ্দিন (লাঙ্গল) ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো: আলমগীরকে (ডাব) সাধারণ ভোটাররা চিনেন না তাই তাদেরকে ভোট দিবে না বলে জানান।
২০০৮ সালে আসনটিতে আ’লীগের মনোনয়ন নিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মেজর (অব.) জসিম উদ্দিন। মেজর জসিম উদ্দিন নির্বাচিত হওয়ার দেড় বছরের মাথায় চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পাঁচ বছর পূর্ণ না হওয়ায় মেজর হাফিজ সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট করেন পরে সুপ্রিম কোর্ট তার প্রার্থিতা বাতিল করে রুল জারি করলে ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আসনটি শূণ্য হয়ে যায়। পরে ২০১০ সালের ২৪ এপ্রিল উপ-নির্বাচনে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহাম্মদকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
এছাড়া, ২০১৪ দশম জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি ভোট বর্জন করায় নুরুন্নবী চৌধূরী শাওনের সাথে প্রার্থী হন জাতীয় পার্টি (এরশাদ) নুরনবী সুমন নামে লালমোহনের এক ব্যক্তি। সেই নির্বাচনেরও নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন নিরঙ্কুশ জয় পায়। এরপর ২০১৮ সালের একাদশ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মেজর হাফিজকে পরাজিত করে তৃতীয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন শাওন।
উল্লেখ্য, তজুমদ্দিন উপজেলায় জাতীয় পার্টির (এরশাদ) কমিটি থাকলেও তাদের কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি এবং কোনো কার্যালয়ও নেই। অন্যদিকে, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির কোনো কমিটি নেই কার্যক্রমও নেই এখানে। তাই তাদের কোনো কর্মী-সমর্থক খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অনেক ভোটারা জানান, এই প্রথম ভোলা-৩ আসনের মানুষ বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির নাম জানতে পেরেছেন।
জানতে চাইলে তজুমদ্দিনের ভোটার মো: আবুল হাসেম, সোহরাব হোসেন, মো: আব্দুর রহীম, মো: রবিউল হক, আরিফুর রহমান, আব্দুর রবসহ অনেকে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কখনো মাও. কামাল উদ্দিন ও মো: আলমগীরকে দেখিনি এবং নামও শুনিনি। যেহেতু তাদেরকে চিনি না তাই তাদেরকে ভোট দিবো না।
দুই প্রার্থীর কেন্দ্রে অ্যাজেন্টের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, টাকার বিনিময়ে অ্যাজেন্ট দিতে পারলেও সেই অ্যাজেন্টরাও তাদের ভোট দিবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। বিএনপি ভোটে না থাকায় শেষ পর্যন্ত নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হলে বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) জসিম উদ্দিনের মধ্যে মূল প্রতিদ্বদ্বিতা হবে।
তজুমদ্দিন উপজেলা জাতীয় পার্টির (এরশাদ) আহ্বায়ক মো: শাহাবুদ্দিন বলেন, ‘আমি ৪ বছর তজুমদ্দিন উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক এ সময়ের মধ্যে আমাদের প্রার্থী মাও. কামাল উদ্দিন সাহেব তজুমদ্দিনে একবারও আসেননি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এখনো প্রচার-প্রচারণা শুরু করিনি এবং কেন্দ্র কমিটিও করতে পারিনি। তবে আমাদের প্রার্থী সম্পূর্ণ নতুন হাওয়ায় সাধারণ ভোটারদের কাছে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।’
তিনি আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তজুমদ্দিনে একটি সভা করবেন বলেও জানান।