সংসদ নির্বাচনে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের বিভেদের রেশ পড়েছে জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে পছন্দের প্রার্থী পেতে তৎপরতা চালাচ্ছে দুই পক্ষ। এ নিয়ে কয়েক দিন যাবৎ আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এদিকে বিএনপিপন্থি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে ভোটকেন্দ্র তত্ত্বাবধানে জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট নিয়োগের দাবি জানিয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ সিটি মেয়র ও সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়নবঞ্চিত হওয়ায় স্থানীয় রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। গত ১০ বছর তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের একক নিয়ন্ত্রক ছিলেন। আশির দশক থেকে জেলা আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রণ করছেন সাদিকের পিতা জেলা সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। পেশাজীবী ও সামাজিক সংগঠনগুলোর নির্বাচনে পদ-পদবি তারাই ভাগবাটোয়ারা করতেন।
সম্প্রতি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি ও সিটি মেয়র আবুল খায়েরের নেতৃত্বে নতুন শক্তির উত্থানে নগর রাজনীতিতে আধিপত্য হারিয়েছেন সাদিক।
আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনের পর নগরে পেশাজীবী সংগঠনগুলোর মধ্যে প্রথম নির্বাচন এটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে, এবার সভাপতি-সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ চাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রী-মেয়রপন্থি আইনজীবীরা। অপরদিকে হাসানাত ও সাদিকপন্থিরাও আগের মতো সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে মরিয়া। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চলছে চাপা উত্তেজনা।
সূত্র জানায়, সভাপতি পদপ্রত্যাশী চারজন। তারা হলেন– হাসানাত-সাদিকপন্থি মুনসুর আহমেদ, গোলাম কবির বাদল, ফয়েজ আহমেদ এবং প্রতিমন্ত্রী ও মেয়রপন্থি সাইফুল আলম গিয়াস। দুই পক্ষ মিলিয়ে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ১৫ জনের অধিক। সাদিকপন্থি মুনসুর আহমেদকে সভাপতি ও প্রতিমন্ত্রী-মেয়রপন্থি খান মো. মোর্শেদকে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী করে ঐক্যবদ্ধ প্যানেল করার জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
মুনসুর আহমেদ বলেন, তিনি সভাপতি প্রার্থী। আরও কয়েকজন প্রার্থী আছেন। এ বিষয়ে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে সমিতির সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র আইজীবীরা আজ বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসবেন। সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী খান মো. মোর্শেদ বলেন, ‘আমাকে প্রতিমন্ত্রী প্রার্থী হতে বলেছেন; আমি প্রার্থী হবো। অন্যদের কী হবে, তা জানি না।’
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, ভোটের দিন দু’জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জন্য নির্বাচন কমিশনে তারা লিখিত আবেদন করেছেন। ফোরামও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি নিচ্ছে।