০২:০৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক, স্বামীর হাতে বৃদ্ধ প্রেমিক খুন

বরিশাল সংবাদ বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
  • / ৩০৪ বার পড়া হয়েছে

দীর্ঘদিন থেকেই ফয়জর মোল্লা ওরফে হুমায়ন কবিরের স্ত্রী মোসা. রুনা বেগমের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন ৬৫ বছরের আবু জাফর মোল্লা। একাধিকবার বাধা দেওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীর প্রেমিক জাফরকে ফেরাতে পারেননি হুমায়ন কবির, যা নিয়ে হুমায়ন কবির ও রুনার সঙ্গে কলহ চলছিল।

তাই জাফরকে মারধরের সিদ্ধান্ত নেন হুমায়ন কবির। এতে স্ত্রী রুনা বেগম প্রথম দিকে রাজি না হলে তাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে বশে আনেন। পরিকল্পনামতে, গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় জাফরকে ফোনকলে বাড়ির পেছনে দেখা করতে বলেন রুনা। প্রেমিকার ফোনকলে নির্ধারিত সময়ে হাজির হন জাফর।

এ সময় জাফর-রুনার মাঝে নানান কথার একপর্যায়ে রুনা কৌশলে প্রেমিককে মাঠের মাঝে নিয়ে যান। এ সময় হুমায়ন কবির উপস্থিত হয়ে জাফরকে মাটিতে শুয়ে হাতে থাকা দা দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। আদালতে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন হুমায়ন কবির ও রুনা বেগম।

ঘটনার বরাত দিয়ে পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. জসীম বলেন, স্থানীয় গ্রামপুলিশের দেওয়া সংবাদে গত ১২ মার্চ সদর উপজেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রাম থেকে আবু জাফরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জাফর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এমন ধারণা করে পোস্টমর্টেম করাতে অনিচ্ছুক ছিল পরিবার। কিন্তু মৃত্যুর বিষয়টি সন্দেহজনক হলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করলে অ্যাডিশনাল এসপি সাজেদুল ইসলাম সজল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ পোস্টমর্টেমের সিদ্ধান্ত দেয়। পোস্টমর্টেম শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে এবং নিহতের ছেলে কবির মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা করে মামলা করেন।

এর পর বিষয়টি উদ্ঘাটন করতে অ্যাডিশনাল এসপি সাজেদুল ইসলাম সজলের নির্দেশনায় এলাকায় নিবিড়ভাবে খোঁজখবর নিলে জাফর-রুনার অবৈধ সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় খুনের ঘটনায় কবির-রুনার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ২৭ মার্চ দিবাগত রাতে অভিযুক্তদের বসতবাড়ি থেকে স্বামী-স্ত্রীকে আটক করেন এসআই দিপায়ন বড়াল। আটকের পর বুধবার পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সমীর মল্লিকের আদালতে হাজির করলে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন স্বামী-স্ত্রী।

আদালতে স্বামী-স্ত্রী স্বীকারোক্তিতে বলেন, জাফরকে খুন করার উদ্দেশ্য ছিল না তাদের। কিন্তু ঘটনাক্রমে খুন করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

এসআই দিপায়ন বড়াল জানান, নিহত জাফর মোল্লা চার মেয়ে ও এক ছেলের বাবা এবং রুনা বেগম এক ছেলে ও দুই মেয়ের জননী ছিলেন।

ট্যাগস :

Add

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

Barisal Sangbad

বরিশাল সংবাদের বার্তা কক্ষে আপনাকে স্বাগতম।

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক, স্বামীর হাতে বৃদ্ধ প্রেমিক খুন

আপডেট সময় : ০৬:৩৩:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

দীর্ঘদিন থেকেই ফয়জর মোল্লা ওরফে হুমায়ন কবিরের স্ত্রী মোসা. রুনা বেগমের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন ৬৫ বছরের আবু জাফর মোল্লা। একাধিকবার বাধা দেওয়া সত্ত্বেও স্ত্রীর প্রেমিক জাফরকে ফেরাতে পারেননি হুমায়ন কবির, যা নিয়ে হুমায়ন কবির ও রুনার সঙ্গে কলহ চলছিল।

তাই জাফরকে মারধরের সিদ্ধান্ত নেন হুমায়ন কবির। এতে স্ত্রী রুনা বেগম প্রথম দিকে রাজি না হলে তাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে বশে আনেন। পরিকল্পনামতে, গত ১১ মার্চ সন্ধ্যায় জাফরকে ফোনকলে বাড়ির পেছনে দেখা করতে বলেন রুনা। প্রেমিকার ফোনকলে নির্ধারিত সময়ে হাজির হন জাফর।

এ সময় জাফর-রুনার মাঝে নানান কথার একপর্যায়ে রুনা কৌশলে প্রেমিককে মাঠের মাঝে নিয়ে যান। এ সময় হুমায়ন কবির উপস্থিত হয়ে জাফরকে মাটিতে শুয়ে হাতে থাকা দা দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। আদালতে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছেন হুমায়ন কবির ও রুনা বেগম।

ঘটনার বরাত দিয়ে পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. জসীম বলেন, স্থানীয় গ্রামপুলিশের দেওয়া সংবাদে গত ১২ মার্চ সদর উপজেলার জৈনকাঠি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রাম থেকে আবু জাফরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। জাফর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এমন ধারণা করে পোস্টমর্টেম করাতে অনিচ্ছুক ছিল পরিবার। কিন্তু মৃত্যুর বিষয়টি সন্দেহজনক হলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করলে অ্যাডিশনাল এসপি সাজেদুল ইসলাম সজল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ পোস্টমর্টেমের সিদ্ধান্ত দেয়। পোস্টমর্টেম শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে এবং নিহতের ছেলে কবির মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা করে মামলা করেন।

এর পর বিষয়টি উদ্ঘাটন করতে অ্যাডিশনাল এসপি সাজেদুল ইসলাম সজলের নির্দেশনায় এলাকায় নিবিড়ভাবে খোঁজখবর নিলে জাফর-রুনার অবৈধ সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় খুনের ঘটনায় কবির-রুনার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে ২৭ মার্চ দিবাগত রাতে অভিযুক্তদের বসতবাড়ি থেকে স্বামী-স্ত্রীকে আটক করেন এসআই দিপায়ন বড়াল। আটকের পর বুধবার পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সমীর মল্লিকের আদালতে হাজির করলে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন স্বামী-স্ত্রী।

আদালতে স্বামী-স্ত্রী স্বীকারোক্তিতে বলেন, জাফরকে খুন করার উদ্দেশ্য ছিল না তাদের। কিন্তু ঘটনাক্রমে খুন করতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

এসআই দিপায়ন বড়াল জানান, নিহত জাফর মোল্লা চার মেয়ে ও এক ছেলের বাবা এবং রুনা বেগম এক ছেলে ও দুই মেয়ের জননী ছিলেন।