সাংবাদিকদের ১৫ সেকেন্ডে ফিনিশ করার হুমকি চবির সমন্বয়কের

- আপডেট সময় : ০২:৩৩:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৪
- / ১১৬ বার পড়া হয়েছে

সাংবাদিকদের ১৫ সেকেন্ডে ফিনিশ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের অন্যতম সহ সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি। শনিবার (১৭ আগস্ট) সার্কিট হাউজে প্রতিনিধি দল ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচজন সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কের পদত্যাগের সংবাদ প্রকাশের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এরইমধ্যে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেয়া তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তালাত মাহমুদের দাবি, পদত্যাগের বিষয়ে সাংবাদিকেরা অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা খুনি হাসিনাকে পালাইতে বাধ্য করছি, আপনারা (মিডিয়া) কিন্তু আমাদের কাছে কেউ না। আপনারা এসব সংবাদ ছড়িয়ে রেহাই পাবেন না। একদম ১৫ সেকেন্ডে ফিনিশ করে দিব। ’
রাফির এই বক্তব্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। গণমাধ্যমে কর্মরত অনেকেই এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনে মাঠ পর্যায়ের সব গণমাধ্যমকর্মী সঠিক তথ্য ও প্রতিবেদন প্রকাশ ও প্রচার করেছে। এরপরও এ ধরনের হুমকি শুনতে হচ্ছে যা দুঃখজনক।
এ বিষয়ে জানতে খান তালাত মাহমুদ রাফিকে ফোন করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর রাফির বক্তব্যের বিষয়ে জানতে ফোন করা হয় এই আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদকে। তিনি বলেন, রাফি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সমন্বয়ক ও চার সহ-সমন্বয়কের পদত্যাগের প্রতিক্রিয়া জানাতে এ বক্তব্য দেয়নি। চট্টগ্রামের তিনটি প্রতিনিধি ইউনিটের কার্যক্রম শেষ হওয়ায় আমরা সে সব কমিটি বন্ধ করে দিলে কিছু কিছু মিডিয়া সেগুলো সমন্বয়কদের সমন্বয়হীনতা ও অনিয়মের কথা বলে নিউজ প্রকাশ করেছে, যা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সেটার জবাবে রাফি এই কথা বলে। তবুও তার পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
একজন সমন্বয়ক ও চার সহ-সমন্বয়কের পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা তাদের ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে না পেরে সেসব দায় আমাদের কাঁধে তুলে দিতে চেয়েছিল। আমরা জানতে পারলে তারা নিজেরাই পদত্যাগ করেন। এই পাঁচজনের দুইজন কোন আন্দোলন করে নাই। তারা আন্দোলনে ছিলেন কিনা সেটি নিয়েও আমরা সন্ধিহান। না হয় ৩০ জনের কমিটিতে কারো সাথে আমাদের বিভেদ নেই কিন্তু এই পাঁচজন আমাদের নিয়ে সমন্বয়হীনতার কথা বলছে।
এর আগে গত শুক্রবার সমন্বয়কদের মাঝে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চবির একজন সমন্বয়ক ও চার সহ-সমন্বয়ক সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগ করেন। তারা হলেন সমন্বয়ক সুমাইয়া শিকদার এবং সহ-সমন্বয়ক আল মাসনূন, ধ্রুব বড়ুয়া, ঈশা দে ও সাইদ্যুজামান রেদোয়ান।
লিখিত বক্তব্যে সহ-সমন্বয়ক আল মাসনূন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বে স্বৈরাচারের পতন করলেও পরে নানা ধরনের সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে সমন্বয়কেরা জবাবদিহি করছে না এবং নানা ধরনের সাফাই দিচ্ছেন যা অনেকাংশেই একপাক্ষিক। প্রথম থেকেই যেসব সমন্বয়হীনতা ও অপরাজনীতির আভাস পেয়েছি, আমরা সেগুলোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি।’ এসব সংবাদের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে চবির সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফি সাংবাদিকদের ওপর ক্ষিপ্ত হন।