০৫:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেবাচিমে ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

বরিশাল সংবাদ বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১০:০৫:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
  • / ১৬৫ বার পড়া হয়েছে

বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দুটি কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে কর্মবিরতি শুরু করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তাদের অভিযোগ, ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে গোপনে ইন্টার্ন ডক্টর্স এ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) ও বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন ডক্টর্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিআইডিএ) পকেট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। বিতর্কিত কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এদিকে, ক্ষমতা খল নিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের খেসারত দিতে হচ্ছে রোগীরে। কর্মবিরতির ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। তার ওপর ইন্টার্ন চিকিৎসক সংকট মোকাবেলায় মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের দিয়ে নতুন রোগী গ্রহণ এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তবে ইন্টার্ন ছাড়াও রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন, শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ‘ইন্টার্ন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের পৃক দুটি কমিটি মঙ্গলবার সকালে অনুমোদন েিয়ছেন হাসপাতাল পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। দুটি কমিটিতে পদ বঞ্চিত এবং কাক্সিক্ষত পদ না পাওয়া চিকিৎসকরা মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেন। ফলে হাসপাতালের ৯টি ইউনিটের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়। তবে কমিটি সমর্থকরা দায়িত্ব পালন করেন মেডিসিন ওয়ার্ডের ৩টি ইউনিট সচল রেখেছেন। শেবাচিম হাসপাতালে ১৯০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক পালাক্রমে এ দায়িত্ব পালন করেন। আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের সদ্য ঘোষিত কমিটির সহ-সভাপতি সাদমান বাকির সাবাব বলেন, ঘোষিত ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির পদধারী ১৮জন ওই কমিটির বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন। তারা কেউ জানেই না যে কমিটি হয়েছে। তাই কমিটির গ্রহণযোগ্যতা থাকার প্রশ্নই আসে না। কমিটির সভাপতি বিএনপি-জামাত পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষণা দেওয়া পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেবায় ফিরবেন না। নতুন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহিউর রহমান বলেন, আমি হঠাৎ করে ফেসবুকে কমিটি দেখতে পাই। পরে আমি পরিচালক স্যারকে বিষয়টি জানিয়ে কমিটিতে না থাকার কথা জানিয়ে দেই। আমরা এই কমিটি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। একমিটি বাতিলসহ না জানিয়ে কমিটিতে রাখায় আমরা কর্মবিরতি শুরু করেছি। ইন্টার্ন ডা. সৌরভ দাস বলেন, ওই কমিটিতে আমাকে সহ-সাধারণ সম্পাদক পে রাখা হয়েছে। তাও বেলা ১২ টার দিকে আমি ফেসবুকে দেখেছি। আমি এখন বিব্রত। আশা করছি পরিচালক স্যার বিষয়টি সমাধান করবেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি ডা. ইমরান হোসেন দাবি করেন, কমিটি সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। যারা আন্দোলন করছেন তারা সভাপতি-সম্পাদক পদ চাচ্ছেন। যোগ্যতার বিচারে এই কমিটি হয়েছে। সাধারণ চিকিৎসকরা কমিটির নেতৃত্ব মেনে কাজ করছেন। ধর্মঘটে সাধারণ চিকিৎসকরা সাড়া দেননি। সুতরাং চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. রেজা তৈমুর মাহমুদ বলেন, সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর সুপারিশে কমিটি হয়েছে। হাসপাতাল পরিচালক অনুমোদন দিয়েছেন। ওই অনুমোদনের ভিত্তিতে আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। কমিটির বিরোধীতাকারী একটি পক্ষ ধর্মঘটে গেলেও সাধারণ চিকিৎসকরা তাতে সাড়া দেননি। একই সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহসান শাহরিয়ার বলেন, সিটি মেয়রকে ভুল বুঝিয়ে সুপারিশ আনা হয়েছে। এতে মদদ দিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম। আমরা এই পকেট কমিটি মানি না। মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশন এবং বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের দুটি কমিটি সুপারিশ করেছেন সিটি মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে দুটি কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। এতে পদবঞ্চিতরা ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গলবার দুপুর থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। তবে কমিটি সর্মক চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, এটি আমাদের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। কমিটির সুপারিশ মেয়র এবং মন্ত্রী মহোদয় করেছেন। সুতরাং চলমান পরিস্থিতি সমাধানে তাদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

ট্যাগস :

Add

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

Barisal Sangbad

বরিশাল সংবাদের বার্তা কক্ষে আপনাকে স্বাগতম।

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

শেবাচিমে ত্যাগীদের মূল্যায়ন না করায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

আপডেট সময় : ১০:০৫:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

বরিশাল শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দুটি কমিটি গঠন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে কর্মবিরতি শুরু করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তাদের অভিযোগ, ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন না করে গোপনে ইন্টার্ন ডক্টর্স এ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) ও বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন ডক্টর্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিআইডিএ) পকেট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন তারা। বিতর্কিত কমিটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এদিকে, ক্ষমতা খল নিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বের খেসারত দিতে হচ্ছে রোগীরে। কর্মবিরতির ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা। তার ওপর ইন্টার্ন চিকিৎসক সংকট মোকাবেলায় মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের দিয়ে নতুন রোগী গ্রহণ এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তবে ইন্টার্ন ছাড়াও রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক রয়েছেন বলে জানিয়েছেন, শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ‘ইন্টার্ন ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের পৃক দুটি কমিটি মঙ্গলবার সকালে অনুমোদন েিয়ছেন হাসপাতাল পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। দুটি কমিটিতে পদ বঞ্চিত এবং কাক্সিক্ষত পদ না পাওয়া চিকিৎসকরা মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেন। ফলে হাসপাতালের ৯টি ইউনিটের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়। তবে কমিটি সমর্থকরা দায়িত্ব পালন করেন মেডিসিন ওয়ার্ডের ৩টি ইউনিট সচল রেখেছেন। শেবাচিম হাসপাতালে ১৯০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক পালাক্রমে এ দায়িত্ব পালন করেন। আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের সদ্য ঘোষিত কমিটির সহ-সভাপতি সাদমান বাকির সাবাব বলেন, ঘোষিত ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির পদধারী ১৮জন ওই কমিটির বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন। তারা কেউ জানেই না যে কমিটি হয়েছে। তাই কমিটির গ্রহণযোগ্যতা থাকার প্রশ্নই আসে না। কমিটির সভাপতি বিএনপি-জামাত পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষণা দেওয়া পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা সেবায় ফিরবেন না। নতুন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহিউর রহমান বলেন, আমি হঠাৎ করে ফেসবুকে কমিটি দেখতে পাই। পরে আমি পরিচালক স্যারকে বিষয়টি জানিয়ে কমিটিতে না থাকার কথা জানিয়ে দেই। আমরা এই কমিটি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না। একমিটি বাতিলসহ না জানিয়ে কমিটিতে রাখায় আমরা কর্মবিরতি শুরু করেছি। ইন্টার্ন ডা. সৌরভ দাস বলেন, ওই কমিটিতে আমাকে সহ-সাধারণ সম্পাদক পে রাখা হয়েছে। তাও বেলা ১২ টার দিকে আমি ফেসবুকে দেখেছি। আমি এখন বিব্রত। আশা করছি পরিচালক স্যার বিষয়টি সমাধান করবেন। ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের সদ্য ঘোষিত কমিটির সভাপতি ডা. ইমরান হোসেন দাবি করেন, কমিটি সর্বস্তরে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। যারা আন্দোলন করছেন তারা সভাপতি-সম্পাদক পদ চাচ্ছেন। যোগ্যতার বিচারে এই কমিটি হয়েছে। সাধারণ চিকিৎসকরা কমিটির নেতৃত্ব মেনে কাজ করছেন। ধর্মঘটে সাধারণ চিকিৎসকরা সাড়া দেননি। সুতরাং চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. রেজা তৈমুর মাহমুদ বলেন, সিটি মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর সুপারিশে কমিটি হয়েছে। হাসপাতাল পরিচালক অনুমোদন দিয়েছেন। ওই অনুমোদনের ভিত্তিতে আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। কমিটির বিরোধীতাকারী একটি পক্ষ ধর্মঘটে গেলেও সাধারণ চিকিৎসকরা তাতে সাড়া দেননি। একই সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এহসান শাহরিয়ার বলেন, সিটি মেয়রকে ভুল বুঝিয়ে সুপারিশ আনা হয়েছে। এতে মদদ দিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক ডা. সাইফুল ইসলাম। আমরা এই পকেট কমিটি মানি না। মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার পরবর্তী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশন এবং বঙ্গবন্ধু ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের দুটি কমিটি সুপারিশ করেছেন সিটি মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। ওই সুপারিশের ভিত্তিতে দুটি কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। এতে পদবঞ্চিতরা ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গলবার দুপুর থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন। তবে কমিটি সর্মক চিকিৎসকরা দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, এটি আমাদের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। কমিটির সুপারিশ মেয়র এবং মন্ত্রী মহোদয় করেছেন। সুতরাং চলমান পরিস্থিতি সমাধানে তাদের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।