ভোলায় ৩৭ প্রার্থীর পদচারণায় সরগরম তিন উপজেলার নির্বাচনীয় মাঠ

- আপডেট সময় : ০৫:৩৮:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪
- / ২২৮ বার পড়া হয়েছে

শফিক খাঁন, ভোলা: আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলার তিনটি উপজেলায় প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ৩৭:প্রার্থী। আর এই ৩৭ প্রার্থীর পদচারণায় পথসভা ও উঠান বৈঠকে সরব নির্বাচনের মাঠ।
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম হয়ে ওঠেছে জেলার তিনটি উপজেলার ভোটের মাঠ। জেলার সদর উপজেলা,দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলাতে এখন উপজেলা ভোট নিয়ে চলছে -জল্পনা-কল্পনা, ভোটাররা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নিয়ে করছেন নানা হিসাব-নিকাশ ।
আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে জেলা সদর, দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিন উপজেলার নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে এবং দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সরগরম হয়ে উঠছে ভোটের মাঠ।
প্রচার প্রচারণা আর প্রার্থীদের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে শহর গ্রামের হাট-বাজার, অলিগলিসহ
লোকালয় পুর্ন জনপদ।
ভোটের আহবান করে মন মাতানো গানে গানে ভোট চাওয়া হচ্ছে মাইক প্রচারের মাধ্যমে।
জেলার তিনটি উপজেলাতেই এবার প্রার্থীর ছড়াছড়ি। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবার দলীয়ভাবে কাউকে প্রার্থী করছে না। প্রার্থিতা উন্মুক্ত থাকায় এবং কাউকে নৌকা প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দলের স্থানীয় নেতারা যে যার মতো করে নির্বাচন করছেন।
সচেতন ভোটারদের সাথে কথা বলে জানাযায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই প্রতিটি এলাকায় সরাসরি স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়ন ও বিভিন্ন জনসম্পৃক্ত জনকল্যাণ মূলক কাজ করে থাকেন। এ কারণে সবাই চান তাদের পছন্দের প্রার্থী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হোক। এবার দলীয় প্রার্থী না থাকায় আর স্বতন্ত্র প্রার্থীর আধিক্য থাকছে বিধায় ভোলায় অন্যান্যবারের চেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে চলছে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে সকল প্রার্থীই এখন সরব। ধাপে ধাপে ভোটের দিনক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে ততই প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকদের তোড়জোড় বাড়ছে।
তবে সাধারণ ভোটাররা বলছেন, সৎ, যোগ্য, পরোপকারী ও বিপদে যাকে কাছে পেয়েছেন এবং আগামী দিনেও পাবেন এমন প্রার্থীকেই বিজয়ী করবেন তারা।
নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, আলোচনা তত বাড়ছে কে হবেন আগামী পাঁচ বছরের জন্য উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান।
এদিকে ইতিমধ্যেই নির্বাচনীয় আচরণ বিধি মেনে চলতে প্রার্থীদের সাথে নিয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
ভোলা জেলা নির্বাচন অফিসের সুত্র মতে জেলার তিন উপজেলায় মোট ৩৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১২ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিবন্ধীতা করছেন।
সদর উপজেলার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীকের আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইউনুছ বলেছেন , আমি দীর্ঘ ১৫ বছর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে মানুষের সেবা করার চেষ্টা করেছি। তাই আমি আশাবাদী জনগণ আমাকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী করবে।
সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীকের মোশারেফ হোসেন বলেন, আমি দুই বার নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি ইনশাআল্লাহ এবার জনগণের ভোটের মাধ্যমে আমাদের জয় সু্- নিশ্চিত।
তিনি আরো বলেন এবারের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়েছে। জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারবেন। আমি বিশ্বাস করি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। জনগণ তাদের পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে পারবেন।
সদর উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রজাপতি প্রতীকের ফরিদা ইয়াসমিন জানান আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী, আমার শুশুর পরিবার বঙ্গবন্ধুর আদর্শে আদর্শিত একটি রাজনৈতিক পরিবার।
আমি পারিবারিক ভাবে রাজনৈতিক শিষ্টাচারিত পরিবারের মানুষ, আমার শশুর, স্বামী, বাশুর, দেবড় সকলেই সারাজীবন মানুষের সেবা করেছেন এবং বর্তমানেও করছেন।
আমি আমার শশুর জননেতা তোফায়েল আহমেদের হাত ধরে সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্যই ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছি।
উল্লেখ্য যে জেলার তিনটি উপজেলা নির্বাচনে সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রাথী ০৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ০৪জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ০৬ জন প্রার্থী লড়ছেন ।
দৌলতখান উপজেলা চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চার জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে চার জন প্রার্থী প্রতিবন্ধীতা করছেন।
বোরহানউদ্দিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিন জন প্রার্থী প্রতিবন্ধীতা করছেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ হোসেন জানান, নির্বাচনকে ঘিরে আমাদের মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার রয়েছে। প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছে। কোথাও যদি আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং আচরণবিধিমালার লঙ্ঘন হয় আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিন উপজেলায় আমাদের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এখন পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।