থানায় মামলা
বরিশাল লাহারহাট লঞ্চঘাটে বিএনপির নেতাদের হামলা ভাংচুর

- আপডেট সময় : ১১:৩৮:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪
- / ২৯৫ বার পড়া হয়েছে

বরিশাল সদর উপজেলার লাহারহাট লঞ্চঘাটে চাঁদা না পেয়ে হামলা ভাংচুর চালিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। গত ১৫ জানুয়ারী দিবাগত রাত ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে বলে জানায় স্থানীয়রা। প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে ১৫/২০টি মটর সাইকেল নিয়ে হঠাৎ লঞ্চঘাটে প্রবেশ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসময় তারা লঞ্চঘাটের দায়িত্বে থাকা তপু ও বাপ্পিকে গালাগল দিতে শুরু করে। গালিগালি করে আর টাকা চায় তারা নেশা করবে টাকার লাগবে। লঞ্চঘাটের দায়িত্বরতরা টাকা দিতে অস্বীকার করলে লঞ্চঘাটের ক্যাশ কাউন্টার ভেংগে ফেলে। তখন ক্যাশ কাউন্টারে থাকা সারাদিনের ক্যাশ ৪৮ হাজার ৭শত টাকা নিয়ে যায়। এসময় বিএনপির সন্ত্রাসীরা লঞ্চঘাটে তান্ডব চালিয়ে অর্ধলক্ষ টাকার মালামাল ভাংচুর করে। ভাংচুরের শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে গণধোলাই দেয় টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রাজন খান ও তার সঙ্গীদের। স্থানীয়দের গণপিটুনি দেখে বিএনপির সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলেও জনতার হাতে আটক হয় রাজন ও রাজিব। বিষয়টি স্থানীয়রা থানা পুলিশকে জানালে থানা পুলিশের সদস্যরা আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে। স্থানীয়রা জানান, পূর্বের ঘাট ইজারা ছিলো যুবদল নেতা রাজনের বড় ভাই সেই সুবাদেই প্রতিনিয়তই বর্তমান ইজারাদারের কাছে অবৈধ স্প্রিডবোট চলাচলের অনুমতি ও ঘাটের অর্ধেক সেয়ার দেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার চাপ প্রয়োগ করে। চাপ প্রয়োগ করেই খ্যান্ত হয়নি যুবদল নেতার বড় ভাই রাসেল। তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়ে একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগের বিষয়ে বরিশাল বন্দর কর্মর্কর্তা উভয়কে স্ব-শরিরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশনা পেয়ে লাহারহাট লঞ্চঘাটের ইজারাদার কুদ্দুস মল্লিক হাজির হন বরিশাল নদী বন্দরে। কুদ্দুস মল্লিকের হাজির হওয়া দেখে সাবেক ঘাট ইজারাদার রাসেল বাহিনী নিয়ে হাজির হয়ে কুদ্দুস মল্লিকের উপর চড়াও হয়। এসময় তাকে মারধর করে ঘাটের জমা দেওয়া টাকা নিয়ে যায় রাসেল ও তার ভাই রাজন। টাকা দিতে অস্বিকৃতি জানালে ঘাট ইজারাদারকে আবারও মারধর শুরু করে।মারধরের ঘটনা বরিশাল লঞ্চঘাট এলাকার পথচারীরা দেখে রাসেল ও তার ভাইকে ধাওয়া করে। ঘটনায় উত্তেজনার সৃষ্টি হলে হাজির হয় কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। পুলিশ দেখে সটকে পড়েন সুচতুর রাসেল ও যুবদল নেতা রাজন। পুলিশের পরামর্শ অনুযায়ী বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় মারধর ও টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন ঘাট ইজারাদার কুদ্দুস মল্লিক। তিনি আরও জানান, বিগত দিনে অনেক টাকা দিয়েছি, অনেক জায়গায় অভিযোগ করেছি তাতেও কোন সুরহা হয় নি। সরকারী রাজস্ব আদায় করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার হামলার শিকার হয়ে থানা পুলিশকে জানিয়েছি। সবসময় তারা দর্শকের ভূমিকা পালন করে। সর্বশেষ হামলার ঘটনায় মামলা নিলেও আমাদের বিরুদ্ধেও একটি হয়রানিমূলক মামলা নিয়েছে ওসি! যার ফলে আমাদের সরকারী রাজস্ব আদায় বিঘ্ন হবে। মূল ঘটনার সময় হয়রানিমূলক মামলায় এজাহারনামীয় আসামীরা কেউই ঘটনাস্থলে ছিলোনা। পুলিশ মিথ্যা বাহানা দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলাটি নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রহমান মুকুলের সাথে। তিনি জানান, ঘটনাস্থলে দুই পক্ষের মারামারি হয়েছে। লিখিত পেয়ে মামলা নিয়েছি। চাদাবাজি ও ভাংচুর করতে গিয়ে জনতার হাতে আটক মামলায় কিভাবে ভিকটিম হয় জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান। বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমাদের নিযুক্ত ইজারাদারের উপর হামলার ঘটনা শুনেছি। অবশ্যই উর্দ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নিবো। ইজারাদার কুদ্দুস মল্লিক জানান, ৯৬ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকায় নেয়া লঞ্চঘাটের সরকারী রাজস্ব আদায় করতে না পারলে অনেক বড় ক্ষতির সম্মূখিন হবো আমরা। তিনি দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও প্রশাসনের উর্দ্বতন কর্মকতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এব্যাপারে সাবেক ঘাট ইজারাদার ও টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযুক্ত রাসেলের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।