১২:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরিশালে বালুমহালের টাকা ভাগাভাগি, বিএনপি নেতাদের তালিকা ভাইরাল

বরিশাল সংবাদ বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০২:৫৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
  • / ১১৮ বার পড়া হয়েছে
বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীর বালুমহাল থেকে আদায় করা অর্থ ভাগাভাগির একটি তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব রিয়াজ মৃধা স্বাক্ষরিত তালিকাটি ভাইরাল হয়।

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে রিয়াজ বলেন, সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলন করত মেসার্স ফাতেমা এন্টারপ্রাইজ। ৫ আগস্টের পর বালু উত্তোলনের জন্য আর আসেনি তারা।

পরে ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বানারীপাড়া পৌর বিএনপির সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান জুয়েল চুক্তি করেন। ওই চুক্তি অনুযায়ী বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হয়। লাভের টাকা ১৭ বছর বঞ্চিত বিএনপির নেতাকর্মীসহ তার অঙ্গসংগঠনে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।এক মাস ১৭ দিনের লাভের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়েছে।

বরিশালের বটতলায় একটি হোটেলে বসে এ ভাগবাটোয়ারার তালিকা করা হয় বলেও উল্লেখ করা হয়।ছড়িয়ে পড়া তালিকায় রিয়াজ মৃধার কাউকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন ‘নেতা আমি যে টাকা পাই, আমার এখানে যারা সব সময় থাকে তাদের অধিকাংশকে এক হাজার, দুই হাজার টাকা করে দিয়েছি। তাহলে দয়া করে বিবেচনা করে দেখুন, আমি একা বালির টাকা খাই কিনা? তাহলে কেন আমার বিরুদ্ধে এত ষড়যন্ত্র হ্যাঁ? আমার দোষ দলীয় লোকজন যে কাজে আসে সে কাজগুলো করার চেষ্টা করি এবং আপনার নির্দেশ পালন করি। আল্লাহ হাফেজ ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। নিচে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব রিয়াজ মৃধার স্বাক্ষর, নাম ও দলীয় পদবি রয়েছে।

তালিকায় মোট দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা ভাগ বাটোয়ারার হিসেব দিয়েছেন। তবে তিনি (রিয়াজ), পৌর বিএনপির সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান, উপজেলা যুবদলের সভাপতি সুমন হাওলাদার ও চাখারের যুবদল নেতা সনেট তালুকদার কত করে নিয়েছেন সেটা উল্লেখ করেননি।

এ বিষয়ে রিয়াজ মৃধা বলেন, নেতা-কর্মীদের ভাগ করে দেওয়ার পরে লাভের টাকা যা ছিল বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তারা চারজন তা ভাগ করে নিয়েছেন।

তালিকায় প্রথম নাম রয়েছে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শাহ আলম মিঞা।

তার জন্য বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক নান্না হাওলাদারকে দিয়েছেন ১০ হাজার টাকা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সালামকে ২৫ হাজার, বিএনপি নেতা রুহুল মল্লিককে ১০ হাজার, এ্যাড. জাহাঙ্গীরকে পাঁচ হাজার, চাখার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলমগীর মেম্বারকে পাঁচ হাজার, চাখারের বিএনপি নেতা সেলিম বালীকে ১০ হাজার, কুদ্দুস ফকিরকে পাঁচ হাজার, সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হানিফ হাওলাদারকে পাঁচ হাজার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খানকে পাঁচ হাজার, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ মীরাকে পাঁচ হাজার, ১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি আলমগীর হোসেনকে পাঁচ হাজার, থানা যুবদল ১০ হাজার, পৌর যুবদল ১০ হাজার, থানা ও পৌর ছাত্রদল ১০ হাজার করে, থানা স্বেচ্ছাসেবক দলকে ১০ হাজার, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দল ১০ হাজার, থানা ও পৌর শ্রমিক দলকে পাঁচ হাজার করে, থানা কৃষক দলকে পাঁচ হাজার, থানা মৎস্যজীবী দলকে পাঁচ হাজার ও সাংবাদিকদের ২০ হাজার টাকা। 

স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলনের ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠান ৫ আগস্টের পর আসেনি। এরপর থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি বিএনপির নেতারা নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা সেখান থেকে নেন।

বানারীপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. অন্তরা হালদার জানান, বালুমহালের ইজারা যিনি নিয়েছেন তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস :

Add

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

Barisal Sangbad

বরিশাল সংবাদের বার্তা কক্ষে আপনাকে স্বাগতম।

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

বরিশালে বালুমহালের টাকা ভাগাভাগি, বিএনপি নেতাদের তালিকা ভাইরাল

আপডেট সময় : ০২:৫৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪
বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদীর বালুমহাল থেকে আদায় করা অর্থ ভাগাভাগির একটি তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব রিয়াজ মৃধা স্বাক্ষরিত তালিকাটি ভাইরাল হয়।

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে রিয়াজ বলেন, সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলন করত মেসার্স ফাতেমা এন্টারপ্রাইজ। ৫ আগস্টের পর বালু উত্তোলনের জন্য আর আসেনি তারা।

পরে ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বানারীপাড়া পৌর বিএনপির সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান জুয়েল চুক্তি করেন। ওই চুক্তি অনুযায়ী বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হয়। লাভের টাকা ১৭ বছর বঞ্চিত বিএনপির নেতাকর্মীসহ তার অঙ্গসংগঠনে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।এক মাস ১৭ দিনের লাভের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করা হয়েছে।

বরিশালের বটতলায় একটি হোটেলে বসে এ ভাগবাটোয়ারার তালিকা করা হয় বলেও উল্লেখ করা হয়।ছড়িয়ে পড়া তালিকায় রিয়াজ মৃধার কাউকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন ‘নেতা আমি যে টাকা পাই, আমার এখানে যারা সব সময় থাকে তাদের অধিকাংশকে এক হাজার, দুই হাজার টাকা করে দিয়েছি। তাহলে দয়া করে বিবেচনা করে দেখুন, আমি একা বালির টাকা খাই কিনা? তাহলে কেন আমার বিরুদ্ধে এত ষড়যন্ত্র হ্যাঁ? আমার দোষ দলীয় লোকজন যে কাজে আসে সে কাজগুলো করার চেষ্টা করি এবং আপনার নির্দেশ পালন করি। আল্লাহ হাফেজ ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। নিচে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব রিয়াজ মৃধার স্বাক্ষর, নাম ও দলীয় পদবি রয়েছে।

তালিকায় মোট দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা ভাগ বাটোয়ারার হিসেব দিয়েছেন। তবে তিনি (রিয়াজ), পৌর বিএনপির সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান, উপজেলা যুবদলের সভাপতি সুমন হাওলাদার ও চাখারের যুবদল নেতা সনেট তালুকদার কত করে নিয়েছেন সেটা উল্লেখ করেননি।

এ বিষয়ে রিয়াজ মৃধা বলেন, নেতা-কর্মীদের ভাগ করে দেওয়ার পরে লাভের টাকা যা ছিল বালুমহাল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তারা চারজন তা ভাগ করে নিয়েছেন।

তালিকায় প্রথম নাম রয়েছে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শাহ আলম মিঞা।

তার জন্য বরাদ্দ ৫০ হাজার টাকা, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক নান্না হাওলাদারকে দিয়েছেন ১০ হাজার টাকা, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সালামকে ২৫ হাজার, বিএনপি নেতা রুহুল মল্লিককে ১০ হাজার, এ্যাড. জাহাঙ্গীরকে পাঁচ হাজার, চাখার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলমগীর মেম্বারকে পাঁচ হাজার, চাখারের বিএনপি নেতা সেলিম বালীকে ১০ হাজার, কুদ্দুস ফকিরকে পাঁচ হাজার, সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হানিফ হাওলাদারকে পাঁচ হাজার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম খানকে পাঁচ হাজার, সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ মীরাকে পাঁচ হাজার, ১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি আলমগীর হোসেনকে পাঁচ হাজার, থানা যুবদল ১০ হাজার, পৌর যুবদল ১০ হাজার, থানা ও পৌর ছাত্রদল ১০ হাজার করে, থানা স্বেচ্ছাসেবক দলকে ১০ হাজার, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দল ১০ হাজার, থানা ও পৌর শ্রমিক দলকে পাঁচ হাজার করে, থানা কৃষক দলকে পাঁচ হাজার, থানা মৎস্যজীবী দলকে পাঁচ হাজার ও সাংবাদিকদের ২০ হাজার টাকা। 

স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলনের ইজারা পাওয়া প্রতিষ্ঠান ৫ আগস্টের পর আসেনি। এরপর থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি বিএনপির নেতারা নিয়ন্ত্রণ করে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা সেখান থেকে নেন।

বানারীপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. অন্তরা হালদার জানান, বালুমহালের ইজারা যিনি নিয়েছেন তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।