বরিশালে চেয়ারম্যানরা পলাতক, চাল পাচ্ছেন না লাখো জেলে

- আপডেট সময় : ০৩:০১:৪৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪
- / ৭৮ বার পড়া হয়েছে

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বরিশাল বিভাগের বেশির ভাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আত্মগোপনে চলে গেছেন। এর ফলে খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন না দেড় লক্ষাধিক জেলে।
সাগরে মাছ আহরণে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা পালনের আওতায় জেলেদের এ সহায়তা পাওয়ার কথা। নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে আরও এক মাস আগে; ২৩ জুলাই। কিন্তু সহায়তার দ্বিতীয় কিস্তিতে প্রত্যেক জেলেকে ৩০ কেজি করে চাল এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
গত মঙ্গলবার বিভাগীয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে বিভাগীয় কমিশনার সাত দিনের মধ্যে বিকল্প ব্যবস্থাপনায় চাল বিতরণে মৎস্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মাছের প্রজনন বৃদ্ধির সুযোগ করে দিতে প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা থাকে। এ সময়ের জন্য তালিকাভুক্ত জেলেরা দুই কিস্তিতে মোট ৮৬ কেজি করে চাল সহায়তা পান। এটি বিতরণ করা হয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে। বরিশাল বিভাগে মোট জেলে ৪ লাখ ২১ হাজার। এবার সহায়তার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৯ জন। প্রথম কিস্তির ৫৬ কেজি করে চাল জেলেরা পেয়েছেন। কিন্তু সরকার পতনের পর আওয়ামী লীগদলীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা আত্মগোপনে গেলে দ্বিতীয় কিস্তির সহায়তা বিতরণ আটকে যায়।
বরগুনার কাঁঠালতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল ইসলাম আত্মগোপনে আছেন। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সমকালকে বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে তালিকাভুক্ত ১ হাজার ৫৪০ জেলেকে প্রথম কিস্তির সহায়তা দিতে পেরেছিলাম। চাল দেওয়ার জন্য প্রশাসন ও ইউপি মেম্বারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তবে আমার মনে হয়, ইউনিয়ন পরিষদে চাল নেওয়া হলে বিএনপির লোকজন লুট করতে পারে।’
এ বিষয়ে জাতীয় মৎস্যজীবী সমিতির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ইকবাল হোসেন মাতুব্বর বলেন, সহায়তাভোগী জেলেদের তালিকা প্রণয়নে স্থানীয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে। প্রশাসনের উচিত যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে দ্রুত চাল বিতরণে পদক্ষেপ নেওয়া।
বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন জানান, ইউপি চেয়ারম্যান না থাকায় চাল বিতরণে জটিলতার বিষয়টি বিভাগীয় আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করেছেন তিনি।
সভার সভাপতি বিভাগীয় কমিশনার শওকত আলী নির্দেশ দিয়েছেন, যে ইউনিয়নে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকবেন, সেখানে প্যানেল চেয়ারম্যান, ইউএনও অথবা প্রশাসনের নিযুক্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে চাল বিতরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সে অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে।