০৬:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Uncategorized

বরিশালের আখ চাষ এখন বিলুপ্তির পথে

বরিশাল সংবাদ বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৮:১৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৩১৬ বার পড়া হয়েছে

বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের কালিহাতা, ঘন্ডেশ্বর, ভরসাকাঠি গ্রামে আগে ব্যাপক আখ চাষ হত। সেখান থেকে উৎপাদন হতো হাজার হাজার মেট্রিক টন গুড়। কিন্তু বর্তমানে আগের মতো আর আখের চাষ হয় না, দেখাও মেলে না প্রকৃত আখের গুড়ের।

ভরসাকাঠি গ্রামের আখ চাষি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, তিনি এ বছর ৫২ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছেন। সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে এক লক্ষ টাকা। চাষকৃত আখ থেকে প্রায় এক হাজার কেজি গুড় উৎপাদন হয়েছে, যার বাজার মূল্য ২ লক্ষ টাকা।

ঘন্ডেশ্বর গ্রামের অপর কৃষক মোহাম্মদ মোশারফ মল্লিক বলেন, তিনি মাত্র ৪৫ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করে খরচ করেছেন ৭৫ হাজার টাকা। আখ থেকে উৎপাদিত গুড় বিক্রি করে আয় করেছেন এক লক্ষ দশ হাজার টাকা।

শফিকুল ইসলাম বলেন, এক সময় এ অঞ্চল আখের গুড়ের জন্য বিখ্যাত ছিল, কিন্তু কালের বিবর্তনে আখ চাষ হারিয়ে গেছে।

কৃষকরা জানান, আখ চাষ অত্যন্ত লাভজনক, কিন্তু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, উন্নত জাতের আখের চারা, রোগ বালাই সনাক্ত ও প্রতিকারের বিষয় অজ্ঞতার কারণে আমরা লাভবান হতে পারছি না। এ বিষয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদের কোন সহায়তা করছে না। তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন আখ চাষের ওপরে সরকারের কোন বরাদ্দ নেই।

কৃষকেরা আরও জানান, মার্চ-এপ্রিল মাসে আখের চারা রোপণ করলে কোন প্রকার খরচ ছাড়াই ফেব্রুয়ারি মাসে আখ মাড়াই করা সম্ভব। কিন্তু মাঝেমধ্যে বিভিন্ন প্রকার রোগ বালাই দেখা দেয়। রোগবালাই নিরাময়ের জন্যই দরকার সরকারি পরামর্শ ও প্রতিকারের নির্দেশনা।

স্থানীয় সিনিয়র স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ নান্নু জানান, কৃষকদের উৎপাদিত গুড় স্থানীয়রা ২০০ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যায়। ভেজালমুক্ত গুড়ের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, এবং এটি একটি সম্ভাবনাময় ফসল।

আখ চাষকে সম্প্রসারণ করে ভেজালমুক্ত গুড় উৎপাদনের দাবি জানান এই শিক্ষক।

এ বিষয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কফিল বিশ্বাস বলেন, আমাদের সরাসরি আখের ওপরে কোন প্রকল্প নেই। তবে আমরা সকল প্রকার পরামর্শ দিয়ে থাকি। রোগবালাই হলে কখন কী কীটনাশক বা বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে তার সকল পরামর্শ আমরা দিয়ে থাকি। এখন থেকে আমরা এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী আখ চাষ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।

ট্যাগস :

Add

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

Barisal Sangbad

বরিশাল সংবাদের বার্তা কক্ষে আপনাকে স্বাগতম।

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

বরিশালের আখ চাষ এখন বিলুপ্তির পথে

আপডেট সময় : ০৮:১৫:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের কালিহাতা, ঘন্ডেশ্বর, ভরসাকাঠি গ্রামে আগে ব্যাপক আখ চাষ হত। সেখান থেকে উৎপাদন হতো হাজার হাজার মেট্রিক টন গুড়। কিন্তু বর্তমানে আগের মতো আর আখের চাষ হয় না, দেখাও মেলে না প্রকৃত আখের গুড়ের।

ভরসাকাঠি গ্রামের আখ চাষি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন সিকদার বলেন, তিনি এ বছর ৫২ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করেছেন। সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে এক লক্ষ টাকা। চাষকৃত আখ থেকে প্রায় এক হাজার কেজি গুড় উৎপাদন হয়েছে, যার বাজার মূল্য ২ লক্ষ টাকা।

ঘন্ডেশ্বর গ্রামের অপর কৃষক মোহাম্মদ মোশারফ মল্লিক বলেন, তিনি মাত্র ৪৫ শতাংশ জমিতে আখ চাষ করে খরচ করেছেন ৭৫ হাজার টাকা। আখ থেকে উৎপাদিত গুড় বিক্রি করে আয় করেছেন এক লক্ষ দশ হাজার টাকা।

শফিকুল ইসলাম বলেন, এক সময় এ অঞ্চল আখের গুড়ের জন্য বিখ্যাত ছিল, কিন্তু কালের বিবর্তনে আখ চাষ হারিয়ে গেছে।

কৃষকরা জানান, আখ চাষ অত্যন্ত লাভজনক, কিন্তু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, উন্নত জাতের আখের চারা, রোগ বালাই সনাক্ত ও প্রতিকারের বিষয় অজ্ঞতার কারণে আমরা লাভবান হতে পারছি না। এ বিষয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদের কোন সহায়তা করছে না। তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন আখ চাষের ওপরে সরকারের কোন বরাদ্দ নেই।

কৃষকেরা আরও জানান, মার্চ-এপ্রিল মাসে আখের চারা রোপণ করলে কোন প্রকার খরচ ছাড়াই ফেব্রুয়ারি মাসে আখ মাড়াই করা সম্ভব। কিন্তু মাঝেমধ্যে বিভিন্ন প্রকার রোগ বালাই দেখা দেয়। রোগবালাই নিরাময়ের জন্যই দরকার সরকারি পরামর্শ ও প্রতিকারের নির্দেশনা।

স্থানীয় সিনিয়র স্কুলশিক্ষক মোহাম্মদ নান্নু জানান, কৃষকদের উৎপাদিত গুড় স্থানীয়রা ২০০ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে যায়। ভেজালমুক্ত গুড়ের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, এবং এটি একটি সম্ভাবনাময় ফসল।

আখ চাষকে সম্প্রসারণ করে ভেজালমুক্ত গুড় উৎপাদনের দাবি জানান এই শিক্ষক।

এ বিষয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কফিল বিশ্বাস বলেন, আমাদের সরাসরি আখের ওপরে কোন প্রকল্প নেই। তবে আমরা সকল প্রকার পরামর্শ দিয়ে থাকি। রোগবালাই হলে কখন কী কীটনাশক বা বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে তার সকল পরামর্শ আমরা দিয়ে থাকি। এখন থেকে আমরা এ অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী আখ চাষ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।