০৮:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরগুনায় স্কুলছাত্রীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা-মাকে পিটিয়ে জখম

বরিশাল সংবাদ বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৬:১৩:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ২৭৯ বার পড়া হয়েছে

বরগুনার আমতলীতে অষ্টম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মা-বাবাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে বখাটে জাহিদ মোল্লা ও তার স্বজনরা লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) এ ঘটনায় মেয়ের মা আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এর আগে বুধবার রাতে আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্কুলছাত্রীর বাবার বাড়ি ঢাকার সাভার থানার বাজারশোন এলাকায়। গত দুই বছর আগে তিনি আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে জমি রেখে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন।

আহত স্কুলছাত্রীর বাবা-মা ও চাচাত ভাই রিমনকে স্বজনরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

জানা গেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গত এক বছর ধরে বখাটে জাহিদ মোল্লা উত্যক্ত করে আসছে। গত তিন মাস আগে ওই স্কুল ছাত্রীকে বখাটে জাহিদ মোল্লা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এমন দাবি ছাত্রীর বাবার। স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল খানের সহযোগীতায় ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে তার বাবার হাতে তুলে দেন। গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে বখাটে জাহিদ মোল্লা পুনরায় উত্যক্ত করে বলে জানান স্কুলছাত্রী। খবর পেয়ে ছাত্রীর বাবা এ ঘটনার প্রতিবাদ করে জাহিদকে মারধর করে বলে দাবি করেন ছেলের খালু স্বজল আকন। এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন রাতে মেয়ের বাবা ও অন্তঃস্বত্ত্বা মাকে শালিস বৈঠকের কথা বলে বখাটে জাহিদ মোল্লার খালু স্বজল আকন ডেকে নেয়। পরে স্বজল আকন, ছালাম আকন, সাইফুল মোল্লা ও বখাটে জাহিদ মোল্লা তাদের লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। তাদের মারধরে মেয়ের বাবা বিবস্ত্র হয়ে গেলেও তারা তাকে মারধরে নিবৃত হয়নি। এ সময় তাদের রক্ষায় মেয়ের চাচাত ভাই রিমন এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে। এতে তাদের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বৃহস্পতিবার আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরপর বখাটে জাহিদ মোল্লা পলাতক রয়েছে।

স্কুলছাত্রীর আহত বাবা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে বখাটে জাহিদ মোল্লা স্কুলে আসা-যাওয়র পথে উত্যাক্ত করে আসছে। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমাকে, আমার দুই মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে।

তিনি আরো বলেন, স্বজল আকন ও ছেলের বাবা সাইফুল মোল্লা আমাকে পিটিয়ে বিবস্ত্র করে। আমি তাদের হাতে পায়ে ধরেও রক্ষা পাইনি। আমার বাড়ি এ এলাকায় না হওয়ায় তারা আমাকে বেশ নির্যাতন করছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

বখাটে জাহিদ মোল্লার খালু স্বজল আকন স্কুলছাত্রীকে তার ভায়রার ছেলের উত্যাক্তের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার ভায়রার ছেলেকে মেয়ের বাবা মারধর করেছে। তাই আমি শালিস বৈঠকে বসার কথা বলে তাদের ডেকে এনেছি। কিন্তু তিনি আমার ওপরে হামলা করেছে।

বখাটের জাহিদ মোল্লার বাবা সাইফুল মোল্লার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুল মুনয়েম সাদ বলেন, আহত স্কুলছাত্রীর বাবার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, তাকে তার ভাইকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ট্যাগস :

Add

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

Barisal Sangbad

বরিশাল সংবাদের বার্তা কক্ষে আপনাকে স্বাগতম।

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

বরগুনায় স্কুলছাত্রীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা-মাকে পিটিয়ে জখম

আপডেট সময় : ০৬:১৩:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৪

বরগুনার আমতলীতে অষ্টম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় মা-বাবাকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে বখাটে জাহিদ মোল্লা ও তার স্বজনরা লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) এ ঘটনায় মেয়ের মা আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এর আগে বুধবার রাতে আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্কুলছাত্রীর বাবার বাড়ি ঢাকার সাভার থানার বাজারশোন এলাকায়। গত দুই বছর আগে তিনি আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামে জমি রেখে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন।

আহত স্কুলছাত্রীর বাবা-মা ও চাচাত ভাই রিমনকে স্বজনরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।

জানা গেছে, উপজেলার চলাভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে গত এক বছর ধরে বখাটে জাহিদ মোল্লা উত্যক্ত করে আসছে। গত তিন মাস আগে ওই স্কুল ছাত্রীকে বখাটে জাহিদ মোল্লা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় এমন দাবি ছাত্রীর বাবার। স্থানীয় ইউপি সদস্য জালাল খানের সহযোগীতায় ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে তার বাবার হাতে তুলে দেন। গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে স্কুলে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে বখাটে জাহিদ মোল্লা পুনরায় উত্যক্ত করে বলে জানান স্কুলছাত্রী। খবর পেয়ে ছাত্রীর বাবা এ ঘটনার প্রতিবাদ করে জাহিদকে মারধর করে বলে দাবি করেন ছেলের খালু স্বজল আকন। এ ঘটনার জের ধরে ওই দিন রাতে মেয়ের বাবা ও অন্তঃস্বত্ত্বা মাকে শালিস বৈঠকের কথা বলে বখাটে জাহিদ মোল্লার খালু স্বজল আকন ডেকে নেয়। পরে স্বজল আকন, ছালাম আকন, সাইফুল মোল্লা ও বখাটে জাহিদ মোল্লা তাদের লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। তাদের মারধরে মেয়ের বাবা বিবস্ত্র হয়ে গেলেও তারা তাকে মারধরে নিবৃত হয়নি। এ সময় তাদের রক্ষায় মেয়ের চাচাত ভাই রিমন এগিয়ে এলে তাকেও পিটিয়ে জখম করে। এতে তাদের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বৃহস্পতিবার আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এরপর বখাটে জাহিদ মোল্লা পলাতক রয়েছে।

স্কুলছাত্রীর আহত বাবা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে বখাটে জাহিদ মোল্লা স্কুলে আসা-যাওয়র পথে উত্যাক্ত করে আসছে। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমাকে, আমার দুই মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে লোহার হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে।

তিনি আরো বলেন, স্বজল আকন ও ছেলের বাবা সাইফুল মোল্লা আমাকে পিটিয়ে বিবস্ত্র করে। আমি তাদের হাতে পায়ে ধরেও রক্ষা পাইনি। আমার বাড়ি এ এলাকায় না হওয়ায় তারা আমাকে বেশ নির্যাতন করছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

বখাটে জাহিদ মোল্লার খালু স্বজল আকন স্কুলছাত্রীকে তার ভায়রার ছেলের উত্যাক্তের কথা স্বীকার করে বলেন, আমার ভায়রার ছেলেকে মেয়ের বাবা মারধর করেছে। তাই আমি শালিস বৈঠকে বসার কথা বলে তাদের ডেকে এনেছি। কিন্তু তিনি আমার ওপরে হামলা করেছে।

বখাটের জাহিদ মোল্লার বাবা সাইফুল মোল্লার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই ফোনের সংযোগ কেটে দেন।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুল মুনয়েম সাদ বলেন, আহত স্কুলছাত্রীর বাবার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, তাকে তার ভাইকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।