১২:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পটুয়াখালীর দুই প্রার্থীর এজেন্ট মিলে গণহারে সিল,ভিডিও ভাইরাল

বরিশাল সংবাদ বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৮:২৭:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে

বার্তা ডেস্ক ॥ পটুয়াখালীর দুমকিতে একটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে ব্যালট পেপার নিয়ে গণহারে সিল মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পটুয়াখালী-১ (সদর-মির্জাগঞ্জ-দুমকি) আসনের দুমকি উপজেলার ২২ নম্বর জামলা গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথে ওই ঘটনা ঘটে।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, এক প্রার্থীর এজেন্ট ব্যালট পেপারের মুড়ি নিয়ে গণহারে সিল মারছেন। অন্য এক প্রার্থীর এজেন্ট সেই ব্যালট ভাঁজ করে বাক্সে ভরছেন। তাঁদের একজন লাঙ্গল প্রতীকের ও অন্যজন মশাল প্রতীকের এজেন্ট বলে ওই বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। তবে কে কোন প্রার্থীর এজেন্ট, সেটা তিনি স্পষ্ট করেননি। তবে জোর করে জাল ভোট দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

সাত মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, জামলা গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথে (পুরুষ) চেয়ারে বসে আছেন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। তাঁর সামনেই ব্যালটের মুড়ি নিয়ে গণহারে সিল মারতে থাকেন এক ব্যক্তি। তাঁর সামনেই পাঞ্জাবি পরা অন্য এক প্রার্থীর এজেন্ট সেই ব্যালট পেপার ভাঁজ করে বাক্সে ভরছেন। কিছুক্ষণ পর যিনি সিল মারছিলেন, তিনি পুরো ব্যালটের মুড়ি নিয়ে গোপন বুথে প্রবেশ করে সিল মারতে থাকেন। একপর্যায়ে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাকে গোপন বুথের কাছে গিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘ভাই, কিছু রাইখে দিয়েন।’ কিছুক্ষণ পর ব্যালটের মুড়ি নিয়ে বেরিয়ে এসে আরও কিছু সিল দিয়ে তিনি অন্যজনের সঙ্গে ব্যালট ভাঁজ করে বাক্সে ঢোকান।

সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই যে দুইজন পোলাপান ঢুকছিল। এরপর সিলটিল পেটাইছে। কী কী করছিল। আমি বাধা দিয়েছি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। আমি নাম জানি না।’ তাঁরা এজেন্ট কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বলেন, ‘প্রথমে অন্য পোলাপান ঢুকছে, জাল ভোট দিতে চাইছে। আমি বাধা দিয়েছি, দিতে দেইনি। পরে দুই-তিনটা ছেলে আইছে। তাদের নম্বর সঠিক ছিল, তাদের ভোট দেয়াইছি। পরে আরেকটা লোক আইছে, আমি দিতে দেইনি। পরে প্রিসাইডিংয়ের কাছে গিয়ে বললাম এ রকম। তিনি বলছেন, “আপনি যাইয়া বইসা থাকেন, হেগো কাজ হেরা করুক।” এইভাবে আসছে আমার কাছে। হেরা এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, ওই যে সিলটিল দিয়া দিছে।’

তবে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আ. ছাত্তার আকন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি তিনি দেখেননি।

জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক নূর কুতুবুল আলম মুঠোফোনে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো প্রার্থী লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আমরা খোঁজ নিয়ে সত্যতা জেনে ব্যবস্থা নিতে পারব।’

Add

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

Barisal Sangbad

বরিশাল সংবাদের বার্তা কক্ষে আপনাকে স্বাগতম।

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন

পটুয়াখালীর দুই প্রার্থীর এজেন্ট মিলে গণহারে সিল,ভিডিও ভাইরাল

আপডেট সময় : ০৮:২৭:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৪

বার্তা ডেস্ক ॥ পটুয়াখালীর দুমকিতে একটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে ব্যালট পেপার নিয়ে গণহারে সিল মারার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পটুয়াখালী-১ (সদর-মির্জাগঞ্জ-দুমকি) আসনের দুমকি উপজেলার ২২ নম্বর জামলা গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথে ওই ঘটনা ঘটে।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, এক প্রার্থীর এজেন্ট ব্যালট পেপারের মুড়ি নিয়ে গণহারে সিল মারছেন। অন্য এক প্রার্থীর এজেন্ট সেই ব্যালট ভাঁজ করে বাক্সে ভরছেন। তাঁদের একজন লাঙ্গল প্রতীকের ও অন্যজন মশাল প্রতীকের এজেন্ট বলে ওই বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। তবে কে কোন প্রার্থীর এজেন্ট, সেটা তিনি স্পষ্ট করেননি। তবে জোর করে জাল ভোট দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।

সাত মিনিটের ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, জামলা গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথে (পুরুষ) চেয়ারে বসে আছেন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান। তাঁর সামনেই ব্যালটের মুড়ি নিয়ে গণহারে সিল মারতে থাকেন এক ব্যক্তি। তাঁর সামনেই পাঞ্জাবি পরা অন্য এক প্রার্থীর এজেন্ট সেই ব্যালট পেপার ভাঁজ করে বাক্সে ভরছেন। কিছুক্ষণ পর যিনি সিল মারছিলেন, তিনি পুরো ব্যালটের মুড়ি নিয়ে গোপন বুথে প্রবেশ করে সিল মারতে থাকেন। একপর্যায়ে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাকে গোপন বুথের কাছে গিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘ভাই, কিছু রাইখে দিয়েন।’ কিছুক্ষণ পর ব্যালটের মুড়ি নিয়ে বেরিয়ে এসে আরও কিছু সিল দিয়ে তিনি অন্যজনের সঙ্গে ব্যালট ভাঁজ করে বাক্সে ঢোকান।

সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই যে দুইজন পোলাপান ঢুকছিল। এরপর সিলটিল পেটাইছে। কী কী করছিল। আমি বাধা দিয়েছি। প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। আমি নাম জানি না।’ তাঁরা এজেন্ট কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বলেন, ‘প্রথমে অন্য পোলাপান ঢুকছে, জাল ভোট দিতে চাইছে। আমি বাধা দিয়েছি, দিতে দেইনি। পরে দুই-তিনটা ছেলে আইছে। তাদের নম্বর সঠিক ছিল, তাদের ভোট দেয়াইছি। পরে আরেকটা লোক আইছে, আমি দিতে দেইনি। পরে প্রিসাইডিংয়ের কাছে গিয়ে বললাম এ রকম। তিনি বলছেন, “আপনি যাইয়া বইসা থাকেন, হেগো কাজ হেরা করুক।” এইভাবে আসছে আমার কাছে। হেরা এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, ওই যে সিলটিল দিয়া দিছে।’

তবে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আ. ছাত্তার আকন বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি তিনি দেখেননি।

জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক নূর কুতুবুল আলম মুঠোফোনে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো প্রার্থী লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আমরা খোঁজ নিয়ে সত্যতা জেনে ব্যবস্থা নিতে পারব।’