নাজিরপুরে ঘূর্ণিঝর রেমালে ক্ষতি ৫৮ কোটি টাকা

- আপডেট সময় : ০৮:৩২:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ জুন ২০২৪
- / ২২৮ বার পড়া হয়েছে

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়ে অন্তত ৫৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
২৩৩.৬৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে ৫৬ হাজার ৫শত ৬৭টি পরিবারে ১ লক্ষ ৮০ হাজার জনগোষ্ঠী নিয়ে এ উপজেলা গঠিত। এ উপজেলায় ঘূর্নিঝড় রেমালে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে মৎস্য,কৃষি ও প্রাণি সম্পদ বিভাগে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে নাজিরপুর উপজেলার প্রায় ৪০ হাজার কৃষক পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
গত রবিবার (২৬ মে) থেকে দক্ষিণ উপকূলে কখনো ভারী, কখনো মাঝারি টানা বর্ষণ হয়। দক্ষিণাঞ্চলের নাজিরপুর এলাকায় আউশ (বীজতলা ও আবাদসহ), চীনাবাদাম, মরিচ, মুগ, তিল, শাকসবজি, পাট, পান, কলা,আম,লিচু,মাল্টা, পেঁপেসহ বিভিন্ন ফল রয়েছে। আর ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক পরিবারের মধ্যে প্রান্তিক, ক্ষুদ্র ও মাঝারি কৃষক পরিবারের সংখ্যাই বেশী। প্রাকৃতিক দুর্যোগ রেমাল ও অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার সমস্ত এলাকা প্লাবিত হয়ে ৫৮ কোটি টকার সম্পদের ক্ষতি সাধণ হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) অফিস সুত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারনে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৪ হাজার ১শত ৩৪ হেক্টর এলাকা জুড়ে পুকুর, দিঘি ও ঘের ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আর এতে মৎস্য বিষয়ক সম্পদের মোট ক্ষতির পরিমাণ ১৭ কোটি ৯০ কোটি টাকা। গরু,ছাগল,ভেড়া,মহিষ,হাঁস,মুরগী খামার রয়েছে প্রায় ৫ হাজারটি। ঝড়ের পানিতে প্লাবিত হয়ে ভেঁসে ও মারা যাওয়ায় প্রাণি সম্পদের ক্ষতির পরিমান ৭কোটি ১০ লক্ষ ৯ হাজার টাকা। মোট সড়ক রয়েছে ৩৫০ কিঃ মিঃ,ব্রিজ ১ হাজার ৫২টি,কালর্ভাট রয়েছে ২ শতটি।
এলজিইডি ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে ক্ষতির পরিমান ১৮ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা, পাঁকা ,আধাপাঁকা,কাঁচা মোট ৪০ হাজার ৫ শত ৯টি ঘর রয়েছে যার মধ্যে সর্ম্পূন ক্ষতি হয়েছে ২শত ৫৩টি এবং আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৭শত ১৪টি। ঘরবাড়ির ক্ষতির পরিমান ২ কোটি ৯৭ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। বিদ্যুত লাইন রয়েছে ১ হাজার ২ শত কিঃ মিঃ। ক্ষতি হয়েছে ৪০ কিঃ মিঃ। বিদ্যুৎ খাতে ক্ষতির পরিমান ২০ লক্ষ টাকা।
প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১শত ৮২টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৫৪টি,কলেজ রয়েছে ৮টি,মাদ্রাসা রয়েছে ১২টি। যার মধ্যে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়,১৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,১টি কলেজ ও ৫টি মাদ্রাসা। শিক্ষ প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমান ৬৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা।
মসজিদ রয়েছে ১শত ৮৬টি,মন্দির রয়েছে ২ শত ৪০টি।ক্ষতিগ্রস্থ মসজিদের সংখ্যা ৫টি এবং মন্দিরের সংখ্যা ২০টি। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমান ১৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা।
গভীর নলকুপ রয়েছে ২ হাজার ২৬টি এবং অগভীর নলকুপ রয়েছে ২ হাজার ৩১টি। ক্ষাতগ্রস্থ নলকুপের সংখ্যা গভীর ৩৫টি ও অগভীর ১ শত ৩০টি। জনস্বাস্থ্য বিভাগে ক্ষতির পরিমান ৪৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। বনাঞ্চল রয়েছে ১ শত ৫০ হেক্টর,বনায়ন ৫ শত হেক্টর, নার্সারী ৬ শত হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে।
বন বিভাগের ক্ষতির পরিমান ৫৯ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। এছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগে ক্ষতি হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মর্কতা মোঃ ইস্রাফিল হোসেন ।
এ বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার অরুপ রতন সিংহ ক্ষতির পরিমানের সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং বলেন আমরা এভাবেই ক্ষতির পরিমান প্রেরন করেছি। সরকারী ভাবে বরাদ্দ পেলে আমরা ধাপে ধাপে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপুরন দেওয়ার ব্যবস্থা করব।