ডিসি নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে প্রশাসনে তোলপাড়

- আপডেট সময় : ০২:০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪
- / ৮৩ বার পড়া হয়েছে

জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদায়নে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে প্রশাসনে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকারের ডিসি পদায়নের শুরু থেকেই একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। ৩ কোটি টাকার চেক কেলেঙ্কারির পর এবার সরাসরি ঘুষের লেনদেনের তথ্য জনসমক্ষে এসেছে। এই ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আলী আযমের নাম এসেছে।
আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এ তথ্য জানান। উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সমন্বয়ে কমিটি করে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর রিপোর্ট মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। গতকাল সচিবালয়ে অর্থের লেনদেনের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান খবরটি ‘ভুয়া’ এবং যে অভিযোগ উঠেছে তা ‘মূল্যহীন’ বলে মন্তব্য করেন। প্রতিবেদনে যে স্ক্রিনশট প্রকাশ করা হয়েছে, তা আইফোনের কিন্তু তিনি স্যামসাং ফোন ব্যবহার করেন বলেও দাবি করেন সিনিয়র সচিব। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যে স্ক্রিনশটের কথা এসেছে তা ভুয়া। ডিসি পদায়ন নিয়ে ঘুষ লেনদেনে তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনায় সচিবালয় থেকে মাঠ প্রশাসন পর্যন্ত এ বিষয়ে ছিল নানা আলোচনা। কর্মকর্তারা নানা রকম মন্তব্য করেন এ ঘুষের লেনদেন নিয়ে। কেউ বিষয়টিকে একেবারেই বিশ্বাস করছেন না। আবার কেউ একেবারে উড়িয়েও দিচ্ছেন না। জনপ্রশাসনে এমন কেলেঙ্কারির ঘটনা সম্পর্কে সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে। এটা খুবই দরকার ছিল। আমরা সবসময় অবিশ্বাসী জাতি, সুতরাং এমন কথা না উঠলেও, না জানলেও অবিশ্বাস তৈরি হয়। যখন জানাজানি হয় তখন আরও বিশ্বাস দৃঢ়তা পায়। তবে এই কমিটিকে সাধুবাদ জানাই। যারা কমিটিতে আছে তারা অভিজ্ঞ লোক। বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয় একটা বাহিনী চালিয়েছেন। একটা ভালো তদন্ত হবে আশা করি। এরপর তদন্ত পরবর্তী বাকি সিদ্ধান্ত উনারা দেবেন। সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনে বসেন এমন এক সচিব বলেন, প্রশাসনটা শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় হয়তো পরিচয়ও দিতে পারব না আমি এই সার্ভিসে ছিলাম। ১৫ ব্যাচের এক অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমরা এসব বিষয় নিয়ে এতটাই বিব্রত যে বলতেও পারছি না সহ্যও করা যাচ্ছে না। ২২ ব্যাচের এক যুগ্ম সচিব বলেন, আমলাদের নামে মামলা হয়, গ্রেপ্তার হয় এসব দেখে আমাদের সন্তাদের এসব সার্ভিসে আনা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভেবে দেখব। সত্যিকার অর্থে নিজেদের বেশ অসহায় মনে হচ্ছে। অতিরিক্ত সচিবদের কেউ কেউ বলেন, বেশি সিনিয়রদের কাজে ফেরানো মনে হয় সঠিক হয়নি। যারা ছিল বা বঞ্চিত তাদের থেকে সচিব করা দরকার ছিল। আর এসব সিনিয়রকে কমিশনের চেয়ারম্যান/সদস্য করলে ভালো হতো। বয়স বাড়লে কাজেও ভুল হতে পারে। হয়তো ঘুষ লেনদেন হয়নি তবে যে খবর বাহিরে ছড়িয়েছে এতে আমরা লজ্জিত। ঘুষের লেনদেন নিয়ে সিনিয়র সচিব ও যুগ্ম সচিবের হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনের ওই তথ্যে জানা গেছে, ডিসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিষয়ে সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান ও যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। মোখলেস উর রহমান কথোপকথনে নিজেকে ‘নির্লোভ’ দাবি করলেও ৫ কোটি টাকার চাহিদা প্রকাশ করেন। অন্যদিকে, ড. জিয়া তাকে ১০ কোটি টাকা রাখার পরামর্শ দেন। কথোপকথনে আর্থিক লেনদেনের বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা উঠে আসে, যার মধ্যে টাকা অর্ধেক ডলারে এবং বাকিটা ক্যাশে নেওয়ার কথাও ছিল। এই কার্যক্রমে নাম উঠে এসেছে আরেক যুগ্ম সচিব আলী আযমের। এসব কথোপকথন সম্প্রতি সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহলে ছড়িয়ে পড়েছে, একটি দৈনিকে রিপোর্টও প্রকাশ হয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে ডিসি পদায়ন কেন্দ্র করে অর্থের লেনদেনের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের আরও বলেন, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ, সরকার যে মোবাইল দিয়েছে সেটাও আমি ব্যবহার করি না। ?আপনারা যারা জানেন, আমার আগের যে নম্বর সেটাই আমি ব্যবহার করতেছি সরকারিভাবে। এই খবরের সত্যতা আছে কি না, আপনি পদত্যাগ করবেন কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, এই প্রশ্ন করার আগে আপনারা নিজেকে প্রশ্ন করেন, কতটুকু যৌক্তিক হচ্ছে আমাকে এই প্রশ্ন করা। মানহানির মামলা করবেন কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বলেন, যারা এটা করেছে তাদের আমরা কতটুকু গুরুত্ব দেই। একটা রাস্তার লোক আমাকে অনেক কথা বলতে পারে, আমি কি রাস্তার লোকের পেছনে দৌড়াব? কখনোই নয়। আমরা সরকারের পজিশনে থেকে জনগণের স্বার্থে কাজ করি। যেভাবে আছি সেভাবেই কাজ করব যতদিন আল্লাহ হায়াতে রেখেছেন নিয়ম-কানুন মোতাবেক। আপনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সরকারের কাছে আপনি আহ্বান জানাবেন কি না জানতে চাইলে মোখলেস উর রহমান বলেন, অভিযোগটা যিনি করেছেন এই অভিযোগকারী আমার কাছে কোনো বিবেচনায় নেই। এই অভিযোগটি আমি মূল্যহীন মনে করি। এটা ভুয়া নিউজ।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদায়নে ঘুষ কেলেঙ্কারির অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে প্রশাসনে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। নতুন সরকারের ডিসি পদায়নের শুরু থেকেই একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। ৩ কোটি টাকার চেক কেলেঙ্কারির পর এবার সরাসরি ঘুষের লেনদেনের তথ্য জনসমক্ষে এসেছে। এই ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ ও আলী আযমের নাম এসেছে।
আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এ তথ্য জানান। উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সমন্বয়ে কমিটি করে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর রিপোর্ট মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। গতকাল সচিবালয়ে অর্থের লেনদেনের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান খবরটি ‘ভুয়া’ এবং যে অভিযোগ উঠেছে তা ‘মূল্যহীন’ বলে মন্তব্য করেন। প্রতিবেদনে যে স্ক্রিনশট প্রকাশ করা হয়েছে, তা আইফোনের কিন্তু তিনি স্যামসাং ফোন ব্যবহার করেন বলেও দাবি করেন সিনিয়র সচিব। এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, যে স্ক্রিনশটের কথা এসেছে তা ভুয়া। ডিসি পদায়ন নিয়ে ঘুষ লেনদেনে তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনায় সচিবালয় থেকে মাঠ প্রশাসন পর্যন্ত এ বিষয়ে ছিল নানা আলোচনা। কর্মকর্তারা নানা রকম মন্তব্য করেন এ ঘুষের লেনদেন নিয়ে। কেউ বিষয়টিকে একেবারেই বিশ্বাস করছেন না। আবার কেউ একেবারে উড়িয়েও দিচ্ছেন না। জনপ্রশাসনে এমন কেলেঙ্কারির ঘটনা সম্পর্কে সাবেক সচিব এ কে এম আবদুল আউয়াল মজুমদার বলেন, সরকার একটি কমিটি গঠন করেছে। এটা খুবই দরকার ছিল। আমরা সবসময় অবিশ্বাসী জাতি, সুতরাং এমন কথা না উঠলেও, না জানলেও অবিশ্বাস তৈরি হয়। যখন জানাজানি হয় তখন আরও বিশ্বাস দৃঢ়তা পায়। তবে এই কমিটিকে সাধুবাদ জানাই। যারা কমিটিতে আছে তারা অভিজ্ঞ লোক। বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয় একটা বাহিনী চালিয়েছেন। একটা ভালো তদন্ত হবে আশা করি। এরপর তদন্ত পরবর্তী বাকি সিদ্ধান্ত উনারা দেবেন। সচিবালয়ে ৬ নম্বর ভবনে বসেন এমন এক সচিব বলেন, প্রশাসনটা শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় হয়তো পরিচয়ও দিতে পারব না আমি এই সার্ভিসে ছিলাম। ১৫ ব্যাচের এক অতিরিক্ত সচিব বলেন, আমরা এসব বিষয় নিয়ে এতটাই বিব্রত যে বলতেও পারছি না সহ্যও করা যাচ্ছে না। ২২ ব্যাচের এক যুগ্ম সচিব বলেন, আমলাদের নামে মামলা হয়, গ্রেপ্তার হয় এসব দেখে আমাদের সন্তাদের এসব সার্ভিসে আনা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভেবে দেখব। সত্যিকার অর্থে নিজেদের বেশ অসহায় মনে হচ্ছে। অতিরিক্ত সচিবদের কেউ কেউ বলেন, বেশি সিনিয়রদের কাজে ফেরানো মনে হয় সঠিক হয়নি। যারা ছিল বা বঞ্চিত তাদের থেকে সচিব করা দরকার ছিল। আর এসব সিনিয়রকে কমিশনের চেয়ারম্যান/সদস্য করলে ভালো হতো। বয়স বাড়লে কাজেও ভুল হতে পারে। হয়তো ঘুষ লেনদেন হয়নি তবে যে খবর বাহিরে ছড়িয়েছে এতে আমরা লজ্জিত। ঘুষের লেনদেন নিয়ে সিনিয়র সচিব ও যুগ্ম সচিবের হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথনের ওই তথ্যে জানা গেছে, ডিসি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আর্থিক সুবিধা নেওয়ার বিষয়ে সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান ও যুগ্ম সচিব ড. জিয়াউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। মোখলেস উর রহমান কথোপকথনে নিজেকে ‘নির্লোভ’ দাবি করলেও ৫ কোটি টাকার চাহিদা প্রকাশ করেন। অন্যদিকে, ড. জিয়া তাকে ১০ কোটি টাকা রাখার পরামর্শ দেন। কথোপকথনে আর্থিক লেনদেনের বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা উঠে আসে, যার মধ্যে টাকা অর্ধেক ডলারে এবং বাকিটা ক্যাশে নেওয়ার কথাও ছিল। এই কার্যক্রমে নাম উঠে এসেছে আরেক যুগ্ম সচিব আলী আযমের। এসব কথোপকথন সম্প্রতি সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহলে ছড়িয়ে পড়েছে, একটি দৈনিকে রিপোর্টও প্রকাশ হয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে ডিসি পদায়ন কেন্দ্র করে অর্থের লেনদেনের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান সাংবাদিকদের আরও বলেন, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ, সরকার যে মোবাইল দিয়েছে সেটাও আমি ব্যবহার করি না। ?আপনারা যারা জানেন, আমার আগের যে নম্বর সেটাই আমি ব্যবহার করতেছি সরকারিভাবে। এই খবরের সত্যতা আছে কি না, আপনি পদত্যাগ করবেন কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, এই প্রশ্ন করার আগে আপনারা নিজেকে প্রশ্ন করেন, কতটুকু যৌক্তিক হচ্ছে আমাকে এই প্রশ্ন করা। মানহানির মামলা করবেন কি না সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বলেন, যারা এটা করেছে তাদের আমরা কতটুকু গুরুত্ব দেই। একটা রাস্তার লোক আমাকে অনেক কথা বলতে পারে, আমি কি রাস্তার লোকের পেছনে দৌড়াব? কখনোই নয়। আমরা সরকারের পজিশনে থেকে জনগণের স্বার্থে কাজ করি। যেভাবে আছি সেভাবেই কাজ করব যতদিন আল্লাহ হায়াতে রেখেছেন নিয়ম-কানুন মোতাবেক। আপনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সরকারের কাছে আপনি আহ্বান জানাবেন কি না জানতে চাইলে মোখলেস উর রহমান বলেন, অভিযোগটা যিনি করেছেন এই অভিযোগকারী আমার কাছে কোনো বিবেচনায় নেই। এই অভিযোগটি আমি মূল্যহীন মনে করি। এটা ভুয়া নিউজ।