বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় নিজ দলের নেতাদের নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজবা উদ্দিন (ফরহাদ)। তিনি বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে সংখ্যালঘুদের বাড়িতে রাতের আঁধারে প্রবেশসহ মাছের ঘাট, বালুমহাল দখল এবং বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের কারণে বিএনপিকে চাঁদাবাজদের দল হিসেবে সাধারণ মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। এই অপতৎপরতার নেতৃত্ব দিচ্ছেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দীন ও তাঁর দলবল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল নগরের কালীবাড়ি সড়কে নিজ বাসভবনে মেহেন্দীগঞ্জের বিএনপির নেতা-কর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় এমন মন্তব্য করেন মেজবা উদ্দিন। তিনি বরিশাল-৪ আসনের (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) সাবেক সংসদ সদস্য। এই আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজীব আহসান আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান বলে প্রচার আছে।

সভায় মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতারা যোগ দেন। সভায় মেজবা উদ্দিন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির নেতারা বিশেষ একটি গ্রুপ তৈরি করে নিজেরা আর্থিকভাবে বিএনপিকে ব্যবহার করছেন। তাঁরা দখল, চাঁদাবাজি করে বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপচেষ্টা করছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা আজ এখানে যাঁরাই এসেছেন, তাঁরা কখনোই দলের ভাবমূর্তিসহ নিজেদের ক্ষতি হয়, সেদিকে পা বাড়াবেন না।’

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সাবেক সংসদ সদস্য মেজবা উদ্দিন বলেন, ‘গিয়াস উদ্দীনসহ তাঁর লোকদের এসব অপকর্মের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতাদের কাছে অভিযোগ আছে। তাঁরা এসব অভিযোগ তদন্ত করছেন এবং কেন্দ্রীয় নেতারা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এদের কাছ থেকে বিএনপিকে মুক্ত করে তৃণমূল বিএনপি নেতা-কর্মীদের মুখে হাসি ফিরিয়ে দেবেন।’

মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন মেহেন্দীগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি জিয়া উদ্দিন, বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি দেলোয়ার হোসেন, লেঙ্গুটিয়ার বিএনপি নেতা আলম ভূইয়া, জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হেলাল বাদশা প্রমুখ।

মেজবা উদ্দিনের বক্তব্যের বিষয়ে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেজবা উদ্দিন যেসব অভিযোগ করেছেন, এসব বাস্তবতাবিবর্জিত। রাজীব আহসান আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগযোগ রাখছেন, সব সময় খোঁজখবর নিচ্ছেন, ভালোমন্দ দেখছেন। এ জন্যই এমন অভিযোগ তোলা হচ্ছে। হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে হামলা, মাছ, বালুর ঘাট, খেয়া ও লঞ্চঘাট দখল করার কোনো ঘটনা এখানে ঘটেনি। পারলে তিনি প্রমাণ দিক। বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ঘটতে পারে তার সঙ্গে তাঁর (মেজবা উদ্দিন) লোকজনও জড়িত আছে।’

গিয়াস উদ্দিন আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরা এখানে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পর্যন্ত হামলা করতে দিইনি। শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়, এমন কাজ, যা বিএনপিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, তা আমরা হতে দিইনি।’