বরিশাল নগরীর ১০১ পৌরসভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। প্রায়ই পলেস্তারা খসে পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আহত হন। পুরাতন ভবনের সুরকি ঝড়ে নোংরা হয় বই ও আসবাবপত্র। এসব সমস্যা সমাধানে নতুন ভবন নির্মাণেরও বরাদ্দ আসে। কিন্তু সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহকে অতিথি না করায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল নির্মাণকাজ। ফলে পুরাতন ভবনে এখনো ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
হাসপাতাল রোডের ঝাউতলা দ্বিতীয় গলিতে ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠা পাওয়া বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে সরকারি হয়। ১২ জন শিক্ষক, একজন দপ্তরি ও দুই শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে বিদ্যালয়টিতে। বিদ্যালয় ভবনের জরাজীর্ণতার জন্য নতুন চারতলা ভবন নির্মাণে ২০২৩ সালে এলজিইডি-পিডিবি ফোর প্রকল্পে নতুন চারতলা ভবন নির্মাণে ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। প্রকল্প অনুসারে ২০২৪ সালের জুন মাসে কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বিদ্যালয়টির একজন অভিভাবক সদস্য বলেন, সাবেক মেয়র নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়ার পরে আমরা খুব টেনশনে পড়ে যাই। বর্তমানে যে ভবনটি আছে সেটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময়ে ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মেয়রকে স্থানীয় কয়েকজন চাঁদাবাজ ভুল বুঝিয়েছিলেন। মূলত নির্মাণকাজ মেয়রকে অতিথি করে শুরু করা হয়নি বলে এই বাধা দেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্লাসে বসলে মাথায় সুরকি পরে। প্রায় সময়ই পলেস্তারা পরে আমরা আহত হই। বিল্ডিং ভেঙে পরার ভয়ে অনেকেই ক্লাসে আসেন না।
[caption id="attachment_13340" align="aligncenter" width="300"] বরিশাল পৌরসভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়[/caption]
প্রধান শিক্ষিকা নূরজাহান বেগম বলেন, আমাদের ভবনটির দোতলা পুরোপুরি বিধ্বস্ত। নিচতলায় মাত্র দুটি কক্ষে দুইশর বেশি শিক্ষার্থী বসিয়ে ক্লাস করাতে হয়। সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি। পুরাতন ভবনে ভেঙে পরার ভয়ে প্রায় পঞ্চাশ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী ক্লাসে আসছেন না। বর্তমান ভবনটির ছাদ থেকে পানি পরে। ব্যবহারের পুরোপুরি অনুপযোগী।
তিনি বলেন, আমাদের নতুন ভবন কাজ শুরু হওয়ার পর সিটি করপোরেশন থেকে চিঠি দিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সিটি করপোরেশনে দাবি করেছে, তাদের নিজস্ব জমিতে আমাদের বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজ যেন আটকে না রাখে, সেজন্য অনেকবার মেয়রের কাছে গিয়েছি, অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু কাজ করতে দেয়নি। এখন আমরা চাই, ভবনটি দ্রুত নির্মাণ করে শিক্ষার্থীদের এবং আমাদের ঝুঁকিমুক্ত করা হোক।
[caption id="" align="aligncenter" width="1920"] বরিশাল পৌরসভা সরকারি প্রাথমিক [/caption]
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ২৯টি ভবনের কাজ শুরু হয়। অন্য ২৮টিতে সিটি করপোরেশনের কোনো অনুমতি লাগেনি। শুধু ১০১ পৌরসভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ শুরু হলে সিটি করপোরেশন চিঠি দিয়ে বন্ধ করেন। তারা দাবি করেছে, জমি তাদের। আসলে যেখানে নতুন ভবনটি নির্মাণ শুরু হয় সেই জমি ওই সরকারি বিদ্যালয়টির নামেই।
এ বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ করনেনি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
হেড অফিস: দিলু রোড, নিউ ইস্কাটন, ঢাকা। বরিশাল অফিস: হাবিব ভবন (৪র্থ তলা), সদর রোড, বরিশাল।
মোবাইল: 01742-280498 ইমেইল: dailybarishalsangbad@gmail.com
© বরিশাল সংবাদ || Barisal Sangbad - ২০২৪