পিরোজপুরের ইন্দুরকানীর যুবক কিরগিজস্তানে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়নের সেউতিবাড়ীয়া এলাকার হেমায়েত মাতুব্বরের ছেলে আরিফ (৩০) এই নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

তারা জানায়, দুই বছর আগে আরিফ তার আত্মীয়ের সঙ্গে ঢাকায় ইলেক্ট্রনিক্সের কাজ করত। সেখান থেকে পরিচয় হয় আদম ব্যবসায়ী প্রতারক তুহিনের সঙ্গে। তুহিন আরিফকে তখন থেকেই মালয়েশিয়া কাজের জন্য পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন সময় চার লাখ টাকা নেয়।

গত এপ্রিল মাসের ২৮ তারিখে আরিফকে হঠাৎ ফোন দিয়ে ঢাকায় নিয়ে যায় এবং মালয়েশিয়া না পাঠিয়ে তড়িঘড়ি করে ভিসা করে কিরগিজস্তান পাঠিয়ে দেয়। কিরগিজস্তান এয়ারপোর্ট গিয়ে আরিফ কাউকে না পেয়ে তিন দিন সেখানে অবস্থান করার পর পাকিস্তানি একটা হোটেলে যায়। সেখানে পুলিশি হয়রানি হলে সে ওখান অন্য এক দালালের মাধ্যমে কৃষিকাজে যায়। দালাল তাকে আটকিয়ে রেখে কাজ করায় এবং বিভিন্ন অজুহাতে নির্যাতন করে।

দালালের চোখ ফাঁকি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও বার্তায় এসব তথ্য জানান নির্যাতনের শিকার আরিফ। নির্যাতনের ভিডিও পেয়ে আরিফের পরিবারে চলছে আহাজারি। হতদরিদ্র পরিবারে আরিফের মা অন্যের বাসায় ঝিয়ের কাজ করেন এবং বাবা একজন দিনমজুর। ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর জন্য বসতবাড়ির জমি বিক্রি করে ও বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন নেন। আরিফকে নির্যাতনের বিষয়ে পরিবার এজেন্সির কাছে জানালে তারা আরও টাকা চেয়ে পরিবারকে হুমকি দেয়।

এ বিষয়ে আরিফের পিতা হেমায়েত জানান, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন আমার ছেলেকে কিরগিজস্তান থেকে উদ্ধার করার অনুরোধ করছি। আমরা পরিবারে সর্বহারা হয়ে গেছি। আরিফের এ সংবাদে আমাদের পরিবার অনাহারে দিন কাটাচ্ছি।

আলামিন জানান, আমাদের এখানে আরিফ কাজ করত। তুহিন এবং মিলন এসে মালয়েশিয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। পরে কিরগিজস্তানে পাঠায়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান, ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ ও বেসরকারি টেলিভিশনের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমি আরিফের বাড়িতে গিয়েছিলাম সব বিষয় জেনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।