বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, দেশের প্রায় ৭ কোটির বেশি শ্রমিক জনগণকে প্রতিনিয়ত অবহেলার শিকার হতে হচ্ছে। তারা ভোট দিয়ে সরকার গঠন করে, অথচ নিজেরাই আজ বঞ্চিত, নির্যাতিত ও অসহায়। শ্রমিকদের আয় কমছে, অধিকার সংকুচিত হচ্ছে এবং তাদের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ মে) মহানগর শ্রমিক দলের আয়োজনে বরিশাল (সংশোধিত) নগরের সদর রোডের দলীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব বলেন। সভাপতিত্ব করেন মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক ফয়েজ আহমেদ খান।
রিজভী অভিযোগ করেন, বিগত ১৫-১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনার শাসনামলে শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার ও ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার হরণ করা হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবা বিল ২০২৩-এর মাধ্যমে শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া করার অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “পোশাক শিল্পে ন্যূনতম মজুরির দাবিতে আন্দোলন করায় শেখ হাসিনার বাহিনী গুলি চালিয়ে আঞ্জুমান আরা খাতুন, জালাল উদ্দিন ও রাসেলসহ অনেক শ্রমিককে হত্যা করেছে। ৫ আগস্টের আন্দোলনে শতাধিক শ্রমিক শহীদ হয়েছেন।”
শ্রমিকদের বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, “গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, হাজার হাজার শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে। অনেক শ্রমিক পরিবারে খাবার নেই, সন্তানদের স্কুল ছাড়তে হচ্ছে।”
রিজভী বলেন, “বিগত সরকারের শ্রমিকবিরোধী নীতির কারণে জুটমিল ও চিনিকল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আইটসোর্সিংয়ের নামে স্থায়ী শ্রমিকরাও চাকরি হারাচ্ছে।”
মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানো নিয়েও সিন্ডিকেটের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “সেই সিন্ডিকেটে ছিলেন মাসুদ, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী লোটাস কামালসহ অনেকে। শ্রমিকরা ঘর-জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েও চাকরি পায়নি।”
তিনি সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের দিকেও ইঙ্গিত করে বলেন, “যদি নতুন সরকারও শ্রমিক ছাঁটাই, বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান শূন্য করে তোলে, তাহলে জনগণের আস্থা থাকবে না।”
রিজভী প্রশ্ন তোলেন, “শেখ হাসিনা কোথায় পালিয়ে আছেন? তার অবস্থান গোপন রাখা হচ্ছে। তিনি ওসামা বিন লাদেনের মতো গোপন থেকে ভিডিও বার্তা দিচ্ছেন।” তিনি আরও দাবি করেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে এবং তিনি নিজেই বলেছেন, এই ২২৭ জনের হত্যা নিশ্চিত হয়েছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ডা. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা কুদ্দুসুর রহমান, হাসান মামুন, ওবায়দুল হক চান, রহমাতুল্লাহ, মেজবাহউদ্দিন ফরহাদ, আবুল হোসেন খান, মনিরুজ্জামান ফারুক, জিয়াউদ্দিন সিকদার ও আবুল কালাম শাহিন প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে এক বর্ণাঢ্য র্যালি নগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এর আগে বিভিন্ন এলাকা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে সমাবেশে যোগ দেয়।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply