বরিশাল (সংশোধিত) সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র পদে বিজয়ী ঘোষণা করতে আদালতে মামলা করেছেন জাতীয় পার্টির পরাজিত প্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস। বুধবার (২৩ এপ্রিল) তিনি বরিশাল (সংশোধিত)ের সদর সিনিয়র সহকারী জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় ২০২৩ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল (সংশোধিত) সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে তাকে বিজয়ী ঘোষণার আবেদন জানিয়েছেন ইকবাল হোসেন তাপস। তার পক্ষে মামলাটি দাখিল করেন আইনজীবী আজাদ রহমান। বিচারক হাসিবুল হাসান অভিযোগ আমলে নিয়ে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বরিশাল (সংশোধিত) মহানগর সদস্য সচিব ইকবাল হোসেন তাপস নির্বাচনে চতুর্থ অবস্থানে ছিলেন। তিনি এর আগে ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচন ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিয়ে পরাজিত হন।
মামলায় তিনি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতসহ অন্যান্য মেয়র প্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিবাদী করেছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই ও এনএসআই সরাসরি নৌকার পক্ষে কাজ করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি আরও দাবি করেন, নির্বাচনের দিন সকাল ১০টার মধ্যে তার এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং কেন্দ্র দখল করে বহিরাগতরা নৌকার পক্ষে জাল ভোট দেয়। ৫০টি কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ২০–২৫ শতাংশ থাকলেও ফলাফলে অতিরিক্ত ভোট দেখানো হয়। তার প্রাপ্ত ভোট মাত্র ৬,৬৬৫ দেখানো হয়েছে, যা তার জনসমর্থনের তুলনায় অনেক কম বলেও মামলায় উল্লেখ রয়েছে।
অন্যদিকে, এর আগে গত ১৭ এপ্রিল মেয়র ঘোষণার দাবি জানিয়ে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমও আদালতে মামলা করেন। তার মামলার অধিকতর শুনানির জন্য ২৪ এপ্রিল দিন ধার্য রয়েছে। তার অনুসারীরা বরিশাল (সংশোধিত)জুড়ে মেয়র ঘোষণার দাবিতে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভও চালিয়ে যাচ্ছেন।
সেই মামলায়ও উল্লেখ করা হয়, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে পরিদর্শনে গেলে ফয়জুল করীম আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলায় রক্তাক্ত হন এবং ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে তার এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়।
বরিশাল (সংশোধিত) আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত ৮৭,৮০৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। ইসলামী আন্দোলনের ফয়জুল করীম ৩৩,৮২৮ এবং জাতীয় পার্টির তাপস ৬,৬৬৫ ভোট পান।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগেই মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত আত্মগোপনে চলে যান। পরে বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলী বরিশাল (সংশোধিত) সিটি করপোরেশনের প্রশাসকের দায়িত্ব নেন। বর্তমানে এই দায়িত্ব পালন করছেন মো. রায়হান কাওছার।
দুই মেয়র প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি মামলার ফলে সিটি নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে জনমনে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এখন আদালতের আদেশের দিকেই তাকিয়ে বরিশাল (সংশোধিত)ের রাজনৈতিক মহল।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply