বরিশাল (সংশোধিত) নগরীর আমানতগঞ্জ এলাকায় জমি দখলকে কেন্দ্র করে এক ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটেছে। যুবলীগের সাবেক কর্মী পরিচয়ধারী ইমরান হোসেন জনি ও তার বোন নুসরাত জাহান হ্যাপির নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত প্রকাশ্য দিবালোকে হামলা চালিয়ে গুরুতর জখম করেছে এক নারী ও তার মেয়েকে। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা ও চাঁদাবাজি নিয়ে বিরোধ চলছিল, যার পরিণতিতে ঘটেছে এই নৃশংস হামলা। গুরুতর আহত দুইজন বর্তমানে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন, নুসরাত জাহান হ্যাপি (৪০), তার ভাই ইমরান হোসেন জনি ওরফে খান জনি (৩৮), কবির খান দুলাল (৫৫) সহ আরও ৪–৫ জন সন্ত্রাসী। অভিযোগ রয়েছে, এরা মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও জমি দখলের সিন্ডিকেট চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।
ভুক্তভোগী আলেকজান্ডার খান জানান, মঙ্গলবার দুপুরে পরিকল্পিতভাবে তার বাসভবনে হামলা চালানো হয়। জমি জবরদখলের চেষ্টার প্রতিবাদ করলে অভিযুক্ত জনি ও তার বোন হ্যাপির নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী তার স্ত্রী নার্গিস বেগম ও কন্যা জোহরাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হামলার পর এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশাল (সংশোধিত) শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
জানাযায় ইমরান হোসেন জনি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি সাবেক মেয়র খোকন সেরনিয়াবাতের অনুসারী বলেও এলাকাবাসীর দাবি। বিগত দিনে দলীয় প্রভাব কাজে লাগিয়ে এলাকায় প্রভাব বিস্তার, জমি দখল, মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ক্ষমতার পালাবদলের পর জনি স্থানীয় কিছু বিএনপি রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে রেখে অপরাধচক্র পরিচালনা করে আসছে।
একই পথে হ্যাপিও, ভাইয়ের ছত্রছায়ায় ‘ভূমিদস্যুতা’র অভিযোগের একাধিক ঘটনার সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় সূত্র জানাযায়। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিনের পর দিন নানা অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি।
এবিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তবে আমানতগঞ্জ এলাকার একাধিক বাসিন্দা বলেন, “এই পরিবারটি পুরো এলাকাকে জিম্মি করে রেখেছে। জমি দখল, ভয়ভীতি দেখানো ও নারীদের হেনস্তা করাই যেন তাদের নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তারা আরও বলেন, “জনি নিজেকে কখনো যুবলীগ নেতা, আবার কখনো বিএনপির লোক বলে পরিচয় দেয়। মূল উদ্দেশ্য একটাই—ক্ষমতা ও ভয়ের মাধ্যমে দখলদারি চালানো। আমাদের মত সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?”
সুশীল সমাজ মনে করছে, রাজনৈতিক পরিচয়ের পেছনে লুকিয়ে থাকা এ ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে দলীয় অবস্থান নির্বিশেষে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তা না হলে দলীয় ভাবমূর্তি যেমন নষ্ট হবে, তেমনি জনআস্থাও হারাবে।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply