শনিবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বিকাল ৫:২৯

বরিশালে ডিবি পুলিশের এএসআই আউয়ালের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ—ঘুষ, মাদক ও সম্পদের পাহাড়

বরিশালে ডিবি পুলিশের এএসআই আউয়ালের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দীর্ঘ তালিকা প্রকাশ—ঘুষ, মাদক ও সম্পদের পাহাড়

dynamic-sidebar

বাহিরে পুলিশের পোশাক, ভিতরে দুর্নীতির দানব—এভাবেই ধীরে ধীরে বরিশালের গোয়েন্দা পুলিশের এএসআই আউয়াল গড়ে তুলেছিলেন তার অনৈতিক সাম্রাজ্য। মাদক ব্যবসায়ী থেকে চাঁদাবাজ, এমনকি সাধারণ নিরীহ মানুষের কাছ থেকেও আদায় করেছেন মোটা অঙ্কের ঘুষ। এবার সেই মুখোশ খুলে গেছে। মাদকসহ নারীকে আটক করে ইয়াবা ও নগদ টাকা রেখে ছেড়ে দেওয়ার সাম্প্রতিক ঘটনায় তার বিরুদ্ধে তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তবে এটিই প্রথম নয়—আউয়ালের বিরুদ্ধে রয়েছে দীর্ঘ দিনের দুর্নীতি ও অপকর্মের অসংখ্য অভিযোগ।

স্থানীয় সূত্র জানায়, এএসআই আউয়াল দীর্ঘ দিন ধরেই মাদকবিরোধী অভিযানের নামে আসামিদের আটক করে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে ছেড়ে দিতেন। মামলা না করে ধামাচাপা দেওয়ার বিনিময়ে তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমনকি অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া মাদকও গোপনে বিক্রি করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

তথ্য অনুসারে, কনস্টেবল পদে চাকরি শুরু করলেও পদোন্নতির পর এএসআই আউয়াল এক যুগের বেশি সময় বরিশালে থেকেই কোটি টাকার সম্পদের মালিক হন। নগরীর নবগ্রাম রোডে রয়েছে দুটি দামী প্লট। এছাড়া বরগুনার গ্রামের বাড়িতেও নামে-বেনামে কিনেছেন কয়েক একর জমি।

সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, নির্ধারিত এলাকার বাইরে গৌরনদীতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে অভিযান চালান তিনি। ওই অভিযানে নারী মাদক ব্যবসায়ীকে ইয়াবাসহ আটক করে ৭৪ হাজার টাকা ও মাদক রেখে ছেড়ে দেন আউয়াল। এরপর ওই নারীর স্বামী মিজান পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

আউয়ালের দাপট ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে স্থানীয়দের মধ্যে ভীতি কাজ করত। অনেকেই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পেতেন। কয়েকজন জানান, মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ নিতেন তিনি, আর এর ফলেই অনেক অপরাধী ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে।

নগর গোয়েন্দা শাখার ইনস্পেক্টর ছগির ও সহকারী পুলিশ কমিশনার রিয়াজ হোসেনের তদন্তে সব কিছু ধরা পড়ে।

এবিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এএসআই আউয়ালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিস্তারিত তদন্ত শেষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে আইনের আশ্রয় যদি হয় অন্যায়ের আশ্রয়স্থল, তাহলে সাধারণ মানুষের ভবিষ্যৎ কোথায়? এএসআই আউয়ালের ঘটনা সেই প্রশ্নই তুলে দেয়। এক দশকের বেশি সময়ের দুর্নীতি আর ক্ষমতার অপব্যবহারের অবসান হলেও, রেখে গেছে একটি বড় প্রশ্ন— আর কত আউয়াল আছে এখনো ছদ্মবেশে?

এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আরও অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন আসছে—যেখানে উঠে আসবে আউয়ালের দুর্নীতির আরও অজানা অধ্যায়। চোখ রাখুন পরবর্তী প্রতিবেদনে।

ফেইজবুকে আমরা

ব্রেকিং নিউজ: আজকের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন 🔰 ধন্যবাদ🔰

ই-পেপার

📰 ই-পেপার (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)

আজকের ই-পেপার

📥 PDF ডাউনলোড করুন

লাইভ টিভি

RSS সর্বশেষ

Desing & Developed BY EngineerBD.Net