ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় কর্মরত এক উপ-পরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ, বিবস্ত্র করে পর্নো ভিডিও ধারণ এবং ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে বরিশাল (সংশোধিত)ের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

রোববার (২০ এপ্রিল) বরিশাল (সংশোধিত)ের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মুহা. রকিবুল ইসলাম অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান।

মামলায় অভিযুক্ত এসআই রাজিব হোসেন (পিতা: মো. রুস্তুম আলী হাওলাদার) ঝালকাঠি সদর উপজেলার কান্ডারগাতি এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় উপ-পরিদর্শক পদে কর্মরত।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ভোলার বোরহানউদ্দিন থানায় কর্মরত থাকাকালে এসআই রাজীব এক মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে গৃহবধূর সঙ্গে পরিচিত হন। পরিচয়ের সূত্র ধরে বিভিন্ন সময়ে তাদের মধ্যে মোবাইলে কথা হতো। গত বছরের ২২ এপ্রিল গৃহবধূ এয়ার কুলার কেনার উদ্দেশ্যে বের হলে এসআই রাজীব বরিশাল (সংশোধিত) শহর থেকে ভালো মানের কুলার কিনে দেয়ার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি হলে তিনি গৃহবধূকে বরিশাল (সংশোধিত)ে নিয়ে আসেন।

সেদিন রাতে ভোলায় না ফিরতে পেরে ‘স্বামী-স্ত্রী’ পরিচয়ে তারা বরিশাল (সংশোধিত)ের সদর রোডের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেন। অভিযোগে বলা হয়, সেখানে গৃহবধূর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করেন এসআই রাজীব এবং তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন। পরবর্তীতে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গৃহবধূকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে আরও একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বরিশাল (সংশোধিত)ের আদালতে মামলা দায়ের করলে বরিশাল (সংশোধিত)ের ট্রাইব্যুনাল মামলাটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। একই সঙ্গে ভোলা পুলিশ সুপারের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও অভিযোগ গিয়েছে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে অভিযুক্ত এসআই রাজীবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে।

তবে এসআই রাজীব তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। গৃহবধূর অনৈতিক কর্মকাণ্ড আমার মাধ্যমে তার সিঙ্গাপুরপ্রবাসী সাবেক স্বামী জানতে পেরেছেন। এজন্য সে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।”

ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।