পটুয়াখালী সদর থানার বড়বিঘাই ইউনিয়নের রিজিয়া বেগম হত্যারহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত ওই নারীর বড় ছেলে খোকন হাওলাদার ওরফে ইউসুফকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ মার্চ সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে রিজিয়া নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। যা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরে রিজিয়ার ভাই শহিদুল ইসলাম মামলা করলে জেলা পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। একইসঙ্গে হত্যা রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামে পটুয়াখালী জেলা পুলিশের একাধিক টিম।
এ ঘটনায় পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিমের বড় ছেলে ইউসুফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন টিআইসি গেটের বিপরীত পাশে আল-বারাকা বাস কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আলামত হিসাবে ১টি ভারি তক্তা ও কাঠের বাটসহ ১টি দা জব্দ করা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে ইউসুফ মাকে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেছে, তার মায়ের সঙ্গে অন্য পুরুষের বিবাহবহির্ভূত একাধিক অবৈধ সম্পর্ক, তার আপন বোনকে বিষ প্রয়োগে হত্যা ও তার বাবাকে কারণে-অকারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করায় মাকে হত্যা করে সে। হত্যার ঘটনার আগের দিন সে গাজীপুর থেকে পটুয়াখালী পৌঁছে। দুপুরে হেতালিয়া বাঁধঘাট মসজিদে ঘুমায়। ঘুম থেকে উঠে মাগরিবের আগে খাটাসিয়া বাজারে পৌঁছে সেখানকার মসজিদে ইফতার করে। ইফতার শেষে বাড়ির পেছনের বিলে পৌঁছে তার বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলে নিশ্চিত হয় যে তার বাবা বাসায় নেই।
অতঃপর সে দরজা খোলা পেয়ে বাসায় ঢুকে তার মা রিজিয়া বেগমকে খাটের উপরে জায়নামাজে বসা দেখতে পায়। এ সময় ভারি তক্তা দিয়ে মাথায় আঘাত করে। ভিকটিম তা ফিরাতে গেলে হাত ভেঙে যায়। এরপর উপর্যুপরি মাথায় ও মুখমণ্ডলে আঘাত করলে ভিকটিম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ঘাতক বাসায় থাকা দা দিয়ে তার মায়ের স্পর্শকাতর স্থানে একাধিক কোপ দেয়। ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যায়।
এদিকে ঘাতককে আদালতে সোপর্দ করা হলে সে মাকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply