বরিশাল (সংশোধিত) সিটি কর্পোরেশন (বিসিসি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০২৩ সালে। নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে তখন স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাতকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ভোটকেন্দ্রে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের উপর হামলার ঘটনাও ঘটে।
অবশেষে অন্তবর্তি সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর ঐ পরিষদ ভেঙ্গে দেওয়া হয়।এরপর গত ১৭ এপ্রিল বরিশাল (সংশোধিত) সদর সিনিয়র সহকারী জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী দলের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহসহ প্রতিদ্বন্দী ছয়জনকে বিবাদী করা হয়।
ঐ মামলা দায়েরর পর প্রতিদিনই বরিশাল (সংশোধিত) নগরীতে চরমোনাই পীরের কর্মী-সমর্থকরা সমাবেশ, মিছিল, গণসমাবেশ, পদযাত্রা করে ফয়জুল করিমকে মেয়র ঘোষণার দাবী জানায়।অপরদিকে এই নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে গত ২৩ এপ্রিল আদালতে মামলা করেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মেয়র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস। আদালতের বিচারক হাসিবুল হাসান মামলাটি পরবর্তীতে আদেশের জন্য রেখেছেন।ইকবাল হোসেন তাপসের আইনজীবী আজাদ রহমান বলেন, সুষ্ঠু না হওয়ায় নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ইকবাল হোসেন তাপসকে মেয়র ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে মামলায়।
মামলায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ, হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী দলের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম সহ প্রতিদ্বন্দী ছয়জনকে বিবাদী করা হয়েছে।এদিকে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমের দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) মামলার অধিকতর শুনানি শেষে আদেশ হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে আগামি ৫ মে নতুন দিন ধার্য করেছেন আদালত।
মামলার আইনজীবী শেখ আবদুল্লাহ নাসির জানান, বৃহস্পতিবার আদেশ না দিয়ে আগামী ৫ মে নতুন দিন নির্ধারণ করেছেন। আমরা আশা করি, আদালত সত্যের পক্ষে রায় দেবেন।গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই নগরীর সদর রোড ও ফজলুল হক এভিনিউ এলাকায় চরমোনাই পীরের অনুসারী ও ইসলামী আন্দোলনের শত শত কর্মী-সমর্থকরা অবস্থান নেয় এবং মিছিলসহ দাবি আদায়ে স্লোগান দিতে থাকে।
তারা বলেন, মুফতি ফয়জুল করিমই নগরীর বৈধ মেয়র। তারা বলেন, তাপস ছিল স্বৈরাচারের দোসর। সে কোন মুখে এখন মামলা করে। তাকে নগরবাসী কোনভাবেই মেনে নেবেনা।এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের এতদিন পরে এসে মামলা করে যে দাবি তোলা হয়েছে তা আদৌ কতটা আইন সম্মত সেটা দেখতে হবে।
তাছাড়া তারা উভয়ই তখন ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে তাদের এখন মেয়র ঘোষণার নৈতিক ভিত্তিও খুব একটা নেই। তাছাড়া স্বৈরাচারী আমলের ঐ নির্বাচনকেই তো অবৈধ মনে করা হয়, তাহলে সেই নির্বাচনকে ভিত্তি করে কিভাবে তারা মেয়র দাবি করছেন ? সবশেষ বিজ্ঞ আদালতই এ বিষয়ে সঠিক সুরাহা দিবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
আপনার মতামত জানান কমেন্টে
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply